কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টায় নদী পার হতে গিয়ে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। কানাডার পুলিশ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তের কাছে একটি নিখোঁজ শিশুসহ আরও দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এ নিয়ে এই সপ্তাহে সেন্ট পিটার্সবার্গে নৌকায় করে লরেন্স নদী পেরিয়ে কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টাকালে দুটি পরিবারের মোট আটজন নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের আকওয়েসনে মোহাক পুলিশ সার্ভিসের প্রধান শন দুলুড সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘অতিরিক্ত দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, একজন শিশু, একজন রোমানিয়ান বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকে ভারতীয় নাগরিক বলে মনে করা হচ্ছে।’ কানাডার কুইবেকের অ্যাকওয়েসেন মোহক অঞ্চলের পুলিশ জানিয়েছে, আটজনের মধ্যে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে। পরে শুক্রবার (৩১ মার্চ) আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় পুলিশের উপ-প্রধান লী অ্যান ও’ব্রায়ান বলেছেন, নিহতরা দুটি পরিবারের সদস্য। একটি পরিবার রোমানিয়ার পাসপোর্টধারী। অপর পরিবারটি ভারতীয়। নিহতদের মধ্যে তিন বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছে। লী অ্যান ও’ব্রায়ান সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, নিহতরা সবাই অবৈধভাবে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিল।’ পরে পৃথকভাবে অ্যাকওয়েসেন মোহক পুলিশের প্রধান শন ডিল্যুড জানান, শুক্রবার উদ্ধারকৃত দুজনই রোমানিয়ার। তাদের মধ্যে একটি শিশু। কর্তৃপক্ষ নিহতদের মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে জলাভূমিতে থাকা বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না তা জানার জন্য ময়নাতদন্তের ফলাফলের অপেক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া নিহতরা সত্যিই কানাডা ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। কানাডার জন-নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো বলেছেন, কানাডার কোস্ট গার্ড এবং কুইবেকের প্রাদেশিক পুলিশ অ্যাকওয়েসেন পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করছে। নিহতদের মধ্যে কানাডিয়ান পাসপোর্টধারী কমপক্ষে দুই শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সপ্তাহে অনানুষ্ঠানিক সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীদের আসা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছেন। এই পদক্ষেপের সমালোচকরা বলেছেন যে, শরণার্থী এবং অভিবাসীরা সীমান্ত অতিক্রম করার সময় আরও ঝুঁকি নিতে পারে। গত বছর কানাডার ম্যানিটোবা থেকে চার সদস্যের একটি ভারতীয় পরিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় হিমায়িত হয়ে মারা যায়।