এবার উত্তরের ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির

এবার ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ এড়াতে যমুনা সেতু পশ্চিম উত্তরের মহাসড়কে ঈদের ১০ দিন আগে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে নির্মিত ১১টি উড়াল সেতুর মধ্যে ৯টি ও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের সার্ভিস সড়ক খুলে দেওয়া হবে। তাছাড়া ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারলেন চালু হওয়ায় সুফল পাবে ঘরমুখী মানুষ। ফলে বিগত সময়ে তীব্র যানজট দেখা গেলেও এবারের ঈদযাত্রা ভোগান্তিমুক্ত ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছে হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।

এছাড়া হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা, যানজট নজরদারিতে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের ব্যবহার, ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি মহাসড়কে চলতে বাধা দেওয়ার ফলে বিগত বছরের ঈদযাত্রার মতো অসহনীয় যানজট এবার দেখা যাবে না। তাই উত্তরের ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা এক দশকের মধ্যে এবারই হবে সবচেয়ে স্বস্তির।স্বাভাবিক সময়ে যমুনা সেতু হয়ে দিনে উত্তরের ১৬টি ও দক্ষিণের ৫টি জেলার প্রায় ১৪ থেকে ১৬ হাজার যানবাহন চলাচল করে।

কিন্তু ঈদের সময় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে বিপুল সংখ্যক গাড়ি একসঙ্গে সেতু পার হতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের ফলে ভোগান্তির শিকার হয় ঈদ করতে ঘরে ফেরা মানুষ।হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, এবার উত্তরের ঈদযাত্রা হবে সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক। ঈদ উপলক্ষে একসঙ্গে সবার ছুটি এবং বাড়ি যাওয়ার জন্য সড়কে একটু চাপ থাকলেও কোনো জট থাকবে না। এর জন্য আমরা জেলা পুলিশ ও সড়ক বিভাগের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি।

জেলা পুলিশ বলছে, যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়ক, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক, হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক ও ঢাকা-পাবনা মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের ৮৮ কিলোমিটার মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে গঠিত কমিউনিটি পুলিশও কাজ করবে। এতে সড়কে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।

যানজট এড়াতে প্রস্তুতির কথা জানিয়ে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক খান পাভেল জাগো নিউজকে বলেন, সেতুতে যানজট এড়াতে উভয় পাশে ৯টি করে মোট ১৮টি টোল বুথ থাকবে। যার মধ্যে মোটরসাইকেলের জন্য ব্যবহৃত হবে দুটি করে মোট চারটি।

সেতুর ওপর কোনো গাড়ি নষ্ট বা দুর্ঘটনা কবলিত হলে ঘটনাস্থলে রেকার নিয়ে যেতেই বেশ সময় লাগে। এজন্য সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশে দুটি রেকার ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থাকবে। সবমিলিয়ে এবার উত্তরের মানুষ স্বস্তি নিয়ে ঘরে ফিরবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, উত্তরের যাত্রীরা এবার চারলেনের সুফল পাবে। তাছাড়া মহাসড়কের অবস্থা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ চলছে। আশা করা যায় আইন মেনে যানবাহন চলাচল করলে এবার কোনো সমস্যা হবে না।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক হোসেন বলেন, যানজট এড়াতে মহাসড়কের কোথাও যানবাহন দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। কোনো যানবাহন বিকল হয়ে পড়লে দ্রুত সেটা সরিয়ে মহাসড়ক সচল করা হবে। এজন্য উদ্ধারকারী রেকার ও চেইন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মজুত থাকবে। প্রস্তুত থাকবে উদ্ধারকারী টিমও।