মাতৃত্বের জেল্লার কথা তো সবাই বলে। কিন্তু সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগের কয়েক মাসে মেয়েদের শরীরে আর অনেকপরিবর্তন আসে- যাকে আপাতদৃষ্টিতে ঠিক ততটাও সুন্দর বলা যায় না। এটা নিয়ে ক’জন কথা বলেন! প্রশ্ন তুলে নিজে সে প্রশ্নের উত্তরও দিলেন অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। দিন চারেক আগে সমাজমাধ্যমে সন্তানের জন্মের খবর দিয়েছিলেন রাধিকা। এ বার সদ্য-মা-হওয়া অভিনেত্রী ভাগ করে নিলেন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার ছবিও। তবে রাধিকা জানিয়েছেন, ছবিগুলো তোলার পর তাঁর নিজেকে দেখতে ভাল লাগেনি একেবারেই। বরং নিজেকে বিশ্রী লেগেছিল। মা হওয়ার পরে অবশ্য হঠাৎ সেই মনোভাব পাল্টে গিয়েছে। তারকাদের মাতৃত্বকালীন স্ফীতোদরের ছবি নিয়ে বরাবরই তুঙ্গে থাকে অনুরাগীদের আগ্রহ। সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার পূর্ণ বিকাশ হলে, তন্বী অভিনেত্রীদের শরীরে যে পরিবর্তন আসে, আগ্রহের কারণ মূলত তা-ই। সেই সব ছবি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার পরে নায়িকাদের মাতৃত্বের ঔজ্জ্বল্য, মাতৃত্বের সৌন্দর্য ইত্যাদি নানা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন অনুরাগীরা। রাধিকা নিজের স্ফীতোদরের ছবি দিয়ে অবশ্য লিখেছেন, ‘‘যেটা কেউ বলে না, তা হল অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সময় কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মহিলাদের। এটা আমার খুব অদ্ভুত লাগে।’’ দু’ সপ্তাহ হল সন্তানের জন্ম দিয়েছেন রাধিকা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁর ছবিগুলি তোলা হয়েছে সন্তানের জন্ম দেওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে। তিনটি পোশাকে হয়েছে ফোটোশুট। একটি বাদামি রঙের স্বচ্ছ শ্যারং, একটি ফিশনেট ড্রেস যেটা পুরোপুরি মাছ ধরার জালের মতোই দেখতে এবং তৃতীয়টি একটি সাদা রঙের আধা স্বচ্ছ গাউন। তিনটি ছবিতেই স্পষ্ট, স্ফীতোদর রাধিকার চেহারা প্রস্থে বেড়়েছে অনেকটাই। হিলহিলে চেহারা গিয়ে প্রকট হয়েছে ভারী কোমর, ফুলেছে পায়ের পাতাও। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওই ধরনের পরিবর্তন ‘স্বাভাবিক’ বলেই মনে করা হয়। কিন্তু রাধিকা বলেছেন, ‘‘ওই সময়ে যে রকম দেখতে লাগছিল আমাকে, তা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি নিজেকে কখনও এ রকম মোটা হয়ে যেতে দেখিনি। আমার শরীর ফুলে গিয়েছিল। তার উপর তলপেটে মারাত্মক যন্ত্রণা। দিনের পর দিন না-ঘুমোনো চেহারা। মা হওয়াটা কোনও দুর্ঘটনা ছিল না। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরের পরিস্থিতি আমার কাছে একটা বড়সড় ধাক্কা ছিল।’’ তবে সন্তানের জন্ম দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই মন বদলেছে রাধিকার। দু’সপ্তাহ আগেও যে ছবিতে নিজেকে দেখতে অসহ্য লাগছিল তাঁর, সেই ছবিই এখন তাঁর কাছে সম্পদের মতো। রাধিকা লিখেছেন, ‘‘সে সময়ে জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই আলাদা ছিল। শারীরিক কষ্ট আর নানা রকম পরিবর্তনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে অন্য কিছু ভাবতে পারছিলাম না। কিন্তু মা হওয়ার দু’ সপ্তাহ পরে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন আবিষ্কার করতে করতে বুঝতে পারছি, তখন নিজে নিজেকে অকারণ কষ্ট দিয়েছি। এখন নিজের ছবিগুলোকে আমি অনেক বেশি সহানুভূতি নিয়ে দেখি। আমি এখন ওই ছবিগুলোর মধ্যেও সৌন্দর্য খুঁজে পাই। এখন মনে হয় ওই ছবিগুলো আমার কাছে সম্পদের মতো।’’ ছবিতে যে তিনটি পোশাক পরেছেন রাধিকা, তার মধ্যে বাদামি রঙের শ্যারংটি জাওয়ারা অ্যালেইনের সৈকতের পোশাকের সংগ্রহের একটি। স্বচ্ছ ওই পোশাকের চেরা অংশ দিয়ে ঊরু পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে রাধিকার। উপরে পোশাকের হল্টারনেক গলার ঝুল বক্ষবিভাজিকা ছাড়িয়ে নেমেছে স্ফীতোদর পর্যন্ত। তবে নীচের অংশটি সেফটিপিনে জোড়া লাগানো হয়েছে। মাছের জালের মতো পোশাকটি বানিয়েছেন ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত পোশাকশিল্পী আশিস গুপ্তা। পিঠ খোলা পায়ের তলা পর্যন্ত পোশাকটির পুরোটাই মাছের জালের মতো দেখতে। শুধু জালের গায়ে বোনা রয়েছে উজ্জ্বল বিডস। রাধিকা ওই পোশাক পরেছেন বিকিনির সঙ্গে। দেখে মনে হচ্ছে নগ্ন শরীরে শুধু মাছের জালটুকুই জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। তৃতীয় পোশাকটি ডি পেটসা ব্র্যান্ডের টার্টলনেক গাউন। গলা পর্যন্ত ঢাকা আধা স্বচ্ছ সাদা পা লুটোনো গাউনে পেটের অংশটি ফাঁকা। সেখান থেকে রাধিকার পূর্ণবিকশিত স্ফীতোদর প্রকট হয়ে রয়েছে। তিনটি পোশাকের সঙ্গেই ভেজা চুল খুলে রেখেছেন রাধিকা। অনুরাগীরা জানিয়েছেন, তাঁকে চমৎকার দেখাচ্ছে তিন পোশাকেই। সূত্র। আনন্দবাজার