সরকারি চাকরিক্ষেত্রে ইসিই অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রুয়েটে মানববন্ধন 

সরকারি চাকরিক্ষেত্রে তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল (ইসিই) অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ইসিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ( ১৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির মেইন গেটে এ মানববন্ধন ও প্রেস ব্রিফিংয় অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ” সনদ চাই, সনদ চাই, সনদ ছাড়া চাকরি নাই “, সনদ যখন দিবি না, ডিপার্টমেন্ট খুলবি না ” ইত্যাদি স্লোগান দেন। এছাড়া তাঁরা, অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। বিভাগের নাম সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তাঁরা বলেন, আমাদের দাবী মূলত ২টি। এগুলো হচ্ছে; ১. BCS/Banking/Power Sector সংশিষ্ট সার্কুলারে ইসিই (রুয়েট) অন্তর্ভুক্ত করা, PSC/UGC থেকে সাবজেক্ট কোড আসা। অর্থাৎ CSE এবং EEE উভয়ের Circular এই ECE অন্তর্ভুক্ত করা। ২. এই মুহূর্তে Equivalent Certificate এর ব্যবস্থা করা যেটা রেজিস্ট্রার থেকে প্রদান করা হবে। পূর্ববর্তীতে যেটা Head Office থেকে প্রদান করা হত সেটার কার্যত কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
তারা বলেন, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসিই বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে চারটি ব্যাচ স্নাতক সম্পন্ন করলেও, সরকারি চাকরির অধিকাংশ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ইসিই বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরবর্তীতে তা সরিয়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে, কুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) এবং রুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের নাম নিয়মিতই সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্ভুক্ত থাকে।
বিভাগীয় প্রধান থেকে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি পাঠালেও তাতে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি হলো, সরকারি ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার, পাওয়ার ও কমিউনিকেশন সংশ্লিষ্ট চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ইসিই বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদেরকে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সমতুল্য স্বীকৃতি দেওয়া।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ‘চাকরির ব্যবস্থা করতে না পারলে, ডিপার্টমেন্ট খোলার দরকার কী ছিল? এখন আমরা এতোগুলা শিক্ষার্থী যেই প্রত্যাশা নিয়ে এই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছি, আমাদের ক্যারিয়ার জীবনের নিশ্চয়তা দেয়ার দায়িত্ব কে নেবে? আমাদের কারিকুলামে ইইই ও সিএসই এর শতকরা ৯০ ভাগ করে সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করার পরও আমরা সেসব বিভাগের সমতুল্য সেক্টরগুলোতে চাকরির আবেদন করতে পারছি না।’
মানববন্ধনে, ইসিই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মাঈন উদ্দীন বলেন, “রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং (ESE) বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ২০১৫  সালে, প্রতিবছর এই বিভাগে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ৬০ জন হয়ে থাকেন। এখন পর্যন্ত ৪ টি ব্যাচ এই বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করছে। আরো ৫ টি ব্যাচ বর্তমানে চলমান রয়েছে।  হতাশার কথা এইযে বিভাগটির ৯ বছর হয়ে গেলেও সরকারি জব সেক্টরে বিভিন্ন পদে যোগ্যতা ও কারিকুলাম সংশ্লিষ্টতা থাকার পরও আমাদের সুযোগ মিলছে না। তার প্রধান কারণ হলো PSC/UGCতে সাবজেক্ট কোড না থাকা ও নিদিষ্ট কোনো সেক্টরে ইসিই এর অন্তর্ভুক্তি না থাকা।ইইই, সিএসই,ইটিই,সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ারিং আইসিটি বিভাগ সমূহ বিসিএসে আবেদন করতে পারলেও আবেদন করতে পারেনি রুয়েটের ইসিই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা যা এক ধরনের বৈষম্য।এই বিষয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবি যাতে অনান্য ডিপার্টমেন্টের মতো আমাদের ও সব ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। “