ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন ড. ইউনূস ও শেহবাজ শরিফ

বিশ্বের উন্নয়নশীল আটটি দেশের পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতাকারী সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন ডি-৮ এর ১১তম সম্মেলনে যোগ দিতে মিশরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর সম্মেলনে ড. ইউনূসের যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৭-২০ ডিসেম্বর মিসরে সরকারি সফর করবেন।প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কায়রোর বাংলাদেশ দূতাবাস। ১৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্ত এর যোগদানের কথা রয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাতে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ কায়রোতে অনুষ্ঠেয় উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮ এর একাদশ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিসরে সরকারি সফর করবেন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলে তা হবে উভয় নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর এখনো এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি।

এর আগে, গত নভেম্বরে নিউইয়কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাইডলাইনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎ হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে ডি-৮ অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক কোঅপারেশন মূলত ইরান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও নাইজেরিয়ায়র সমন্বয়ে গঠিত। ডি-৮ এর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বিশ্ব অর্থনীতিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অবস্থানকে শক্তিশালী করা, বাণিজ্যের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং সদস্য দেশগুলোর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ইত্যাদি।

বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আগামী ১৯ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া ডি-৮ এর সম্মেলনটিকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন তৈরিতে বিশেষভাবে জোর দেয়া হবে এবারের সম্মেলনে।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি বিশেষভাবে গাজা ও লেবানন ইস্যু নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। সিরিয়ার বাশার আল আসাদ পতনের মাধ্যমে শেষ হয়েছে বাথ পার্টির ৬১ বছরের শাসনের। সিরিয়ার পরিবর্তিত বাস্তবতায় মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শক্তিশালী অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।