বিজয় দিবসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারতের যুদ্ধ বলে দাবি করা নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাবে বাংলাদেশ। এনিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বিজয় নিয়ে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া ভারতকে জানানো হবে। তবে মোদির বক্তব্য নিয়ে আইন উপদেষ্টা যে মন্তব্য করেছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধাণে সচেষ্ট বাংলাদেশ। আগামীকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মিয়ানমার ইস্যুতে আলোচনা করতে থাইল্যান্ডে যাচ্ছি। এ সময় ডি-৮ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের সাথে বেশ কয়েকটি সাইডলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারে যুদ্ধাবস্থা চলার কারণে সাময়িক সেন্টমার্টিনে যাওয়া-আসার রুট বদল হচ্ছে। পরবর্তীতে বিষয়টি ঠিক হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গতকাল ১৬ ডিসেম্বর নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, আজ বিজয় দিবসে আমরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সৈন্যদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ উৎসর্গ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে। এই দিনটি তাদের অসাধারণ বীরত্ব এবং তাদের অদম্য চেতনার প্রতি রইলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে ও আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।
মোদির টুইটের সার্বিক অংশ এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেখানে মুক্তিযুদ্ধকে ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাফল্য’ বলেই মনে হবে। পুরো পোস্টে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিল। এমনকি এই ‘বিজয় দিবস’ যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত তা বোঝারও কোনো উপায় নেই।
এরপর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মোদির বক্তব্যের প্রভাদ জানান। আসিফ নজরুল লেখেন, ‘তীব্র প্রতিবাদ করছি। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। ভারত ছিল এই বিজয়ের মিত্র, এর বেশি কিছু নয়।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও মোদির পোস্টের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মোদি দাবি করেছে, এটি শুধু ভারতের যুদ্ধ এবং তাদের অর্জন। তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের অস্তিত্বই উপেক্ষিত। যখন এই স্বাধীনতাকে ভারত নিজেদের অর্জন হিসেবে দাবি করে, তখন আমি একে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, এবং অখণ্ডতার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখি। ভারতের এই হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া অবশ্যম্ভাবী। এই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।’