নৌ পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু তারা যদি পায়ে পড়ে ঝগড়া করে তাহলে বাংলাদেশিরা তো আর ওই দেশমুখী হবে না।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর আধুনিক নদী বন্দর নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে লঞ্চঘাটে ভারত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, এটি যদিও আমার বিষয় না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। ওনারা অনেকটা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। আমার মনে হয় ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। আর যদি না হয়ে থাকে তাহলে তলব করা হবে। আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু তারা যদি পায়ে পড়ে ঝগড়া করে তাহলে বাংলাদেশিরা তো আর ওই দেশমুখী হবে না। ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো খারাপ সম্পর্ক ছিল না। তাদের সঙ্গে আমাদের যে বন্ধুত্বসুলভ ব্যাপার ছিল সেটা খারাপ পর্যায়ে এসেছে ওনাদের কারণে। উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে অন্য ধর্মালম্বী যারা আছেন তারা আমাদের দেশের নাগরিক। তাদের বিষয় আমরা দেখব। সরকারের কাজই এটি। অনেকেই তাদের মিডিয়াতে এসে হুমকি দিচ্ছেন। দয়া করে এটি আর করবেন না। আমরা একটা বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাব নিয়ে থাকতে চাই। কিন্তু বাংলাদেশকে যদি এভাবে হেনস্তা করতে থাকেন, তাহলে মনে রাখবেন বাংলাদেশ ১৮ কোটি জনগণের দেশ। অন্য ছোটখাট দেশ আপনাদের আশপাশে যেগুলো আছে তেমন না। আগরতলার ঘটনা আমরা আশা করি না। এটা কাম্যও না। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ, গণমাধ্যমেরও একটা সীমারেখা আছে। তারা যেন তাদের লোককে উত্তেজিত না করে এবং সবার মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি না করে। এটাই আমার অনুরোধ।
বন্দরের নির্মাণকাজে অনিয়ম প্রসঙ্গে বলেন, পূর্বে কাজগুলো যে অনিয়মগুলো হয়েছে সেগুলো তো আমি আর জাল দিয়ে ধরে আনতে পারব না। সেই সন্দেহে তো কাজ বন্ধ করছি না। এখন যাতে কোনো ধরনের চুরি না হয় সেটাই আমাদের দেখা ব্যাপার। আমি নিজে এসেছি কাজটি দেখার জন্য। নানা কারণে কাজটি করতে দেরি হয়েছে, যে কারণে নিজেই দেখার জন্য এসেছি। যে প্রতিষ্ঠান কাজটি নিয়েছেন, তাদের পূর্বেই চিন্তা করা দরকার ছিল কাজটিতে সমস্যাগুলো কি।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে একটি ভালো প্রকল্প হচ্ছে। আমি চাঁদপুরবাসীর কাছে অনুরোধ করব, আপনাদের যা যা সহযোগিতা করা দরকার, তাই করুন। অনেকে এখানে অবৈধভাবে বিভিন্ন স্থাপনা তুলেছেন। আমরা কারো সঙ্গে আপোস করব না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আপনাদের অর্থাৎ জনগণের জন্য। এখানে আমরা তো এসে থাকবে না। আপনারা ব্যবহার করবেন। এটি নির্মাণে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সে বিষয় তুলে ধরবেন।
মেঘনায় ড্রেজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আমি ঢাকা থেকে আসার সময় চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জের মাঝামাঝি ষাটনল এলাকায় দেখেছি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আমাকে দেখে তারা পালিয়েছে। কিন্তু আমি ছবি তুলে রেখেছি। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসককে ডেকেছি কথা বলার জন্য। আমি সেখানে যাব। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তহ বিআইডাব্লিউটিএর স্থানীয় কর্মকর্তারা।