বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী আজারবাইজান। ঢাকায় একটি দূতাবাস খোলার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে দেশটি। এসব লক্ষ্য সামনে রেখে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশটির সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ একথা জানান।
তিনি বলেন, তার সরকার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উভয় দেশের জন্য বাড়তি সম্ভাবনা দেখতে পাওয়ায় ঢাকায় একটি আবাসিক দূতাবাস খোলার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে।
আলিয়েভ আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করতে আজারবাইজান সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ সফর করবে।
প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিপ্লবের প্রশংসা করে বলেন, তিনি কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি জানান, অধ্যাপক ইউনূসের চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে আজারবাইজানে একটি যুব স্বনির্ভর কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।
তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আপনার কাজটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে আমি জানি আপনি এই চ্যালেঞ্জ সফলভাবে অতিক্রম করতে পারবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে আরো দৃঢ় সম্পর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে উভয় দেশ সমৃদ্ধ হবে।
অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, তেলসমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে আরো বেশি বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকা উচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের জাহাজ-নির্মাণ শিল্পে শত শত বাংলাদেশি কাজের সুযোগ পেয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ বলেন, আজারবাইজান ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তিনি বাংলাদেশের সাথে তাদের ডিজিটালাইজেশনের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং তুরস্ক ও আজারবাইজানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক উপস্থিত ছিলেন।