মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র দশদিন বাকি রয়েছে। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’জনেই সমানে সমান লড়াই করছেন। জনমত জরিপে দুই প্রার্থীর মধ্যে এখনো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে
তবে কোনো কারণ ছাড়াই ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে একধরনের হতাশা এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও জরিপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, হোয়াইট হাউসে প্রবেশে উভয় প্রার্থীরই প্রায় সমান সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১০ দিনের জরিপ ট্র্যাকিং গড় বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এক সপ্তাহ আগে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তবে সাতটি দুদোল্যমান রাজ্যের জরিপ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছে। এর ফলে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট কে পাবেন সে সম্পর্কে খুব স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।
জরিপের গড় অনুযায়ী, কমলা হ্যারিস মিশিগানে এক পয়েন্ট এবং পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, উইসকনসিন ও নেভাদায় ১ শতাংশেরও কম ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। অপরদিকে নর্থ ক্যারোলাইনায় দুই পয়েন্টে এবং অ্যারিজোনায় এক পয়েন্টে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।
এই পরিসংখ্যান হ্যারিসের জন্য কোনো বিপর্যয় নয় এবং ট্রাম্পের জন্য বিজয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এ জরিপ ৫ নভেম্বরের ফলাফলের সঙ্গে মিল থাকলে কমলা হ্যারিস ইলেকটোরাল কলেজে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাবেন। কিন্তু দুই শিবিরের ভিন্ন ভিন্ন আবহ থেকে আপনি কখনোই তা জানতে পারবেন না।
বিগত কয়েকদিন ধরে ট্রাম্প ফ্যাসিবাদ ও একনায়কতন্ত্রের প্রতিনিধিত্ব করছে বলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন হ্যারিস ও তার ডেমোক্র্যাটিক সমর্থকরা। শুক্রবার অ্যাক্সিওসে মাইক অ্যালেন এবং জিম ভ্যান্ডেহেই লিখেছেন, ‘কয়েকজন শীর্ষ ডেমোক্র্যাট আমাদের ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন— তারা মনে করে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হেরে যাবেন। যদিও জরিপগুলোর ফলাফল ১১ দিন পর উল্টে যেতে পারে।’ ডেমোক্র্যাটরা ইতিমধ্যেই আঙুল তুলতে শুরু করেছেন হ্যারিসের পরাজয়ের জন্য কে বেশি দায়ী।
এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অশুভ বাগাড়ম্বরে প্রচারণা শিবিরকে অনেকটা ‘আত্মবিশ্বাসী’ বলে মনে হচ্ছে। প্রচারণায় ট্রাম্প তার বিরোধীদের কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।
তবে পরস্পরবিরোধী মনোভাব সমর্থনযোগ্য নয় বলে মনে করছেন জরিপকারীদের একাংশ। যদিও নতুন জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প হ্যারিসের আগের লিডের ব্যবধান কমিয়ে এনেছেন। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন।
হ্যারিসের প্রায় ৫২ শতাংশ ভোটার বলেছেন, ট্রাম্প জিতলে তারা ক্ষুব্ধ হবেন। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থীর সমর্থকদের মাত্র ৪২ শতাংশ বলেছেন, তারা হ্যারিসের জয়ের বিষয়ে একই অনুভব করবেন।
সিএনএন এর পোলিং বিশেষজ্ঞ হ্যারি এনটেন বলেন, ‘আমার ধারণা ডেমোক্র্যাটরা মনে করে— এই নির্বাচনে আরও অনেক কিছু রয়েছে এবং সে কারণেই তারা আতঙ্কিত হচ্ছে।
সাতটি সুইং স্টেটের সাড়ে চার হাজারেরও বেশি ভোটারের ওপর পরিচালিত মর্নিং কনসাল্ট পরিচালিত এক জরিপে এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করার প্রবণতা দেখা যায়। জরিপে দেখা গেছে, দোদুল্যমান রাজ্যের ভোটারদের ৪৯ শতাংশ রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থীকে ‘বিপজ্জনক’ বলে মনে করে। ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্পকে অর্ধেকের বেশি ভোটার ‘‘খুব বেশি বয়স্ক’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন, যেখানে হ্যারিসের ক্ষেত্রে একই কথা বলেছেন মাত্র ৫ শতাংশ।