গ্যাস-অ্যাসিডিটির যম লবঙ্গ পানি! ফেরায় ফুসফুসের হাল

যুগ যুগ ধরে ভেষজ গাছগাছড়া এবং মশলা রোগ নিরাময়ের অন্যতম দাওয়াই হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের রান্নাঘরেই রয়েছে তেমনই একাধিক উপকারী ভেষজের ভাণ্ডার। শুধু সেসবের গুণ সম্পর্কে জেনে তা সেবন করার দেরি!

এই কাজটা ঠিকমতো করতে পারলেই কিন্তু ফিরবে স্বাস্থ্যের হাল। তেমনই এক অত্যন্ত উপকারী মশলা হলো লবঙ্গ। জানলে অবাক হবেন, এই অতি পরিচিত ভেষজে রয়েছে কার্যকরী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা একাধিক রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে।

তবে এই ভেষজের সমস্ত গুণ পেতে চাইলে রাতেরবেলায় এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি লবঙ্গ ফেলে রাখুন। তারপর পরের দিন সকালে উঠে সেই পানি ছেঁকে নিয়ে গলায় ঢালুন, তারপর দেখুন ম্যাজিক। অল্প দিনেই বদলে যাবে আপনার স্বাস্থ্যের হাল-হকিকত।

তাই আর দেরি না করে লবঙ্গ ভেজানো পানি খাওয়ার একাধিক চমকে দেওয়া গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। এতে হয়তো আপনার মধ্যেও সচেতনতা বাড়বে। আপনিও এই পানীয়কে ডায়েটে জায়গা করে দেবেন। তাতেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্ত হতে হবে।

গ্যাস, অ্যাসিডিটি হবে পগার পার​

প্রায়ই গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজমের মতো পেটের সমস্যায় যদি ভুগে থাকেন, তবে এবার থেকে প্রতিদিন সকালে লবঙ্গ ভেজানো পানির গ্লাসে চুমুক দেওয়া শুরু করুন। আশা করছি এতেই এসব ছুটকো সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাবেন।

কারণ লবঙ্গে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা হজমে সাহায্যকারী নানা উৎসেচকের ক্ষরণ বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই নিয়মিত লবঙ্গ ভেজানো পানি পান করলে যে গ্যাস, অ্যাসিডিটি ও পেটে ব্যথার মতো সমস্যাকে অনায়াসে পরাস্ত করা সম্ভব হবে, তা তো বলাই বাহুল্য!

মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ফিরবে​

আমাদের মুখে বসবাস করে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া। এসব ব্যাকটেরিয়ার কারসাজিতেই কিন্তু মুখে দুর্গন্ধ, ঘা, মাড়ির সংক্রমণসহ একাধিক সমস্যার ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। সুতরাং সুস্থ থাকতে জীবাণু নিধনের ব্রত গ্রহণ করতে হবে।

এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে লবঙ্গ পানি। কারণ এই পানিতে রয়েছে এমন কিছু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান, যা মুখগহ্বরের বসবাস করা সব ব্যাকটেরিয়ার কাছে যমদূত। তাই মুখের অন্দরের হাল ফেরাতে প্রতিদিন সকালে এই পানীয়তে চুমুক দিতে ভুলবেন না যেন!

বাড়বে ইমিউনিটি​

জানলে অবাক হবেন, আপনার অতি পরিচিত লবঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিন্তু শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে পারে। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে চাঙ্গা করার কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার। তাই একাধিক সংক্রামক অসুখের ফাঁদ এড়াতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত লবঙ্গ পানিতে চুমুক দিতেই হবে। এতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।

ওয়েট লস ড্রিংক​

ওজনকে স্বাভাবিকের গণ্ডিতে আটকে রাখতেই হবে। এই কাজটা করতে পারলেই কিন্তু ডায়াবেটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক ক্রনিক রোগের ফাঁদ এড়াতে পারবেন।

এই কাজটি করার ক্ষেত্রে আপনার ব্রহ্মাস্ত্র হতে পারে লবঙ্গ পানি। কারণ এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা বিপাকের হার বাড়াতে পারে। এমনকি খিদে কমানোর কাজেও এর জুড়ি নেই। সুতরাং ওজন কমিয়ে সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে এই পানীয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিন।

ফুসফুসের জন্য ধন্বন্তরি​

নিয়মিত দূষিত বায়ুতে শ্বাস নেওয়ার কারণে অ্যাজমা, সিওপিডি-এর মতো জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে! তবে ভালো খবর হলো, নিয়মিত লবঙ্গ পানি খেলে ফুসফুসের হাল শুধরে যাবে। তাই গোটা জীবন শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা এড়িয়ে চলার ইচ্ছে থাকলে নিয়মিত লবঙ্গ পানি খাওয়া আবশ্যক।