ছোট ও বড় পর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। এতদিন নাটক-টেলিফিল্মের কাজ নিয়েই অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকতেন। তবে তুলনামূলক এখন কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। স্বভাবে অনেকটা—ঠোঁটকাটা। যার কারণে প্রায় সময়ই আলোচনায় থাকেন তিনি।সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সরব শবনম ফারিয়া। সমসাময়িকা নানা বিষয় নিয়েও ফেসবুকে নিজের ভাবনার কথা বলে থাকেন। আবার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও এ মাধ্যমে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। ফের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নিজের অবস্থান ও ভাবনার কথা লেখলেন এই অভিনেত্রী।
শবনম ফারিয়া তার ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘ভাই, আপনারা কারা মানুষের পোস্টে গিয়ে এমন কমেন্ট দেন, মানুষ মনে করে আমি ফেক অ্যাকাউন্ট বানায়া কমেন্ট দিছি। আবার এইসবের স্ক্রিনশট আমার কাছে আসে! এত সময় কোত্থেকে পান? কেন এমন করেন? কি আনন্দ পান? নাকি কেউ নিজেরাই লিখে প্রিটেন্ড করে আমি তাদের নিয়ে চিন্তিত! যেইটাই হোক এইসব কইরেন না আল্লাহর ওয়াস্তে।’
জীবন নিয়ে প্যারায় আছেন শবনম ফারিয়া। তা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কিছু মানুষের এইটুকু সেন্সের অভাব আছে যে, যেই জিনিস আমি নিজ থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছি, আমি আবার রাস্তায় গিয়ে দেখব না আমার ছুড়ে ফেলা জিনিস কে কুড়ায় পেল কিংবা কুড়ায় পেয়ে সে সেইটা মাথায় তুলে নাচে নাকি ডাস্টবিনে আবার ফেলে দিচ্ছে! জীবন, শুটিং, চাকরি, বাসা, ফ্যামিলি সব নিয়ে অনেক প্যারা আমার জীবনে। ফেলে দেয়া জিনিসের পিছনে দেয়ার মতো এত সময়, ইচ্ছা, আগ্রহ কিংবা সুযোগ কোনোটাই নাই! আল্লাহর কসম।’আবেগের বশে করা ভুল শুধরেছেন শবনম ফারিয়া। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যাদের জীবনে কোনো এচিভমেন্ট নাই, নিজের যোগ্যতায় কিছু করে দেখানোর যোগ্যতা নাই, তাদের ‘মুই কি হনু রে’ বলে একটা বিষয় থাকে, মনে করে দুনিয়া তাদের কেন্দ্র করে ঘুরতেছে। দুনিয়া অনেক বড়। আমার দুনিয় এখন আল্লাহর রহমতে অনেক বড়, অনেক বিস্তৃত! জীবনের কোনো একটা সময়ে আবেগের বসে করে ফেলা ভুল, কিছু সময়ের পর সেই ভুল শোধরাতে পেরে সেইটা নিয়ে আফসোস করার মতো বোকা আমি না। আমার একটা সময় পর্যন্ত কষ্ট ছিল, আমার মনে হইতো আমার সাথে অনেক ইনজাস্টিস হইছে। কিন্তু এখন আমি জানি, সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। আল্লাহ ভুল শোধরানোর সুযোগ সেইজন্যই দিয়েছেন, যাতে মানুষ সামনে এগিয়ে গিয়ে আল্লাহর বাকি সব রহমতের দেখা পায়।’
শবনম ফারিয়ার সঙ্গে যারা অন্যায় করেছেন, সেই অন্যায়ের বিচার সৃষ্টিকর্তা করবেন। এমন বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে শবনম ফারিয়া বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমার সাথে যারা ইনজাস্টিস করেছ, আল্লাহ তাদের প্রাপ্য তাদের দিয়ে না হয় তাদের আশেপাশের মানুষ, পরবর্তী প্রজন্ম তাদের দিয়ে হলেও বিচার করবে! এইসব ফালতু জিনিস নিয়ে লিখার বয়স পার করে ফেলছি। তাও এক গাদা স্ক্রিনশট পেয়ে লিখলাম।’
জীবনের ভুল নিয়ে আর লিখতে চান না শবনম ফারিয়া। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি জীবনে অনেক দূর আগায় আসছি। সামনে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেয়ার জন্য অনেক বড় সুসংবাদও আছে (ক্যারিয়ার/ লেখাপড়া বিষয়ক)। আমি আর জীবনের কোনো পর্যায়ে করে ফেলা ভুল নিয়ে কিছু লিখতে চাই না, সামনে লিখার অনেক বড় বড় টপিক আছে, অনেক বড় পরিসরে লেখা/কথা বলার সুযোগ আসছে, সেগুলো নিয়েই ভাবতে চাই।’উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে হারুন অর রশীদ অপুর সঙ্গে পরিচয় হয় শবনম ফারিয়ার। এরপর দুজনের মাঝে তৈরি হয় ভালো বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি বদল করেন তারা। ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এই জুটি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সংসার ভাঙার ঘোষণা দেন ফারিয়া। এরপর অপু বিয়ে করলেও এখনো একা ফারিয়া।