‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র প্রথম জন্মদিন কনকচাঁপার

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নাকি দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। সেই নতুন স্বাধীনতার আজ প্রথম জন্মদিন প্রথিতযশা ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এবং রাজনীতিক রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপার।

১৯৬৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অসংখ্য হিট গানের এ গায়িকার জন্ম হয়েছিল ঢাকায়। এই শহরেই বেড়ে ওঠা। যদিও কনকচাঁপাদের পৈতৃক বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে। তার বাবার নাম আজিজুল হক মোর্শেদ। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে কনকচাঁপা তৃতীয়।

জন্মদিনে এই শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার অনেক সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব এবং শুভানুধ্যায়ী। সেসব শুভেচ্ছাবার্তার জবাবও দিয়েছেন সামাজিকমাধ্যমে সুপার অ্যাকটিভ কনকচাঁপা। খ্যাতিমান এই শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে ঢাকা টাইমসও।

সংগীত জীবন

চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুলসংগীত, লোকগীতিসহ প্রায় সব ধরনের গানে সমান পারদর্শী কনকচাঁপা। যদিও কয়েক বছর ধরে তিনি নিয়মিত গান করেন না। থাকেন না দেশেও। কয়েক বছর ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। তবে দীর্ঘ একটা সময় সংগীত জগতে ছিলেন প্রতাপের সঙ্গেই।

তিন যুগের সংগীত ক্যারিয়ারে সিনেমার তিন হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা। তার একক অ্যালবামের সংখ্যা ৪৬টি। যৌথ অ্যালবাম করেছেন ১৫টি। চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূরের প্রায় প্রতিটি গানেই কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা। এ জুটির গান মানেই হিট। শাবনূর আর তিনি ছিলেন এক-অন্যের পরিপূরক।

সংগীত সাধনা

কনকচাঁপা বাংলাদেশের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী বশীর আহমেদের ছাত্রী ছিলেন। দীর্ঘদিন তার কাছে উচ্চাঙ্গ, নজরুলসংগীতসহ অন্যান্য ভারতীয় সংগীতের তালিম নিয়েছেন। তবে জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পেছনে বাবা আজিজুল হক মোর্শেদ ও স্বামী মইনুল ইসলাম খানের অবদানকেই অগ্রগণ্য মনে করেন এই শিল্পী।

পুরস্কার ও সম্মাননা

চলচ্চিত্রে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন কনকচাঁপা। পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার, একাধিকবার দর্শক ফোরাম পুরস্কার, প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, চারবার পেয়েছেন ‘মেরিল-প্রথম আলো’ পাঠক জরিপ পুরস্কার’সহ অসংখ্য সম্মাননা।

লেখক জীবন

গানের পাশাপাশি লেখক হিসেবেও কনকচাঁপার সুখ্যাতি রয়েছে। ২০১০, ২০১২ ও ২০১৬ সালের অমর একুশে বইমেলায় তার লেখা ‘স্থবির যাযাবর’, ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’ এবং ‘মেঘের ডানায় চড়ে’ বই তিনটি প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে একসময় নিয়মিত কলামও লিখেছেন তিনি। ২০২০ সালে প্রকাশ হয় তার জীবনীমূলক বই ‘কাটা ঘুড়ি’।

এর পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত কনকচাঁপা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-১ কাজিপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন তিনি।

কনকচাঁপার অভিযোগ, এই দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছিল। বিটিভিসহ সরকারি কোনো প্রোগ্রামে তিনি গান গাওয়ার প্রস্তাব পান না দীর্ঘদিন। দেশে কোনো কনসার্ট করারও সুযোগ পাননি।