পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন সে সময়ের সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ।ওই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন র্যাবকে দিয়ে অপারেশন শুরু করার অনুমতি দেওয়া হলে, প্রাণহানির ঘটনাও নাও ঘটতে পারত।’
বৃহস্পতিবার ‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার’ ও বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন তিনি। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এ নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। দীর্ঘ ১৫ বছরে ওই ঘটনার ‘আসল রহস্য’ উন্মোচিত হয়নি দাবি করে এরি মধ্যে অনেকেই হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তও দাবি করেছেন। সে সময় সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল মইন ইউ আহমেদ।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের মহাপরিচালককে ফোনে পাওয়া গেলো। আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? তিনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমাকে বলেন। ‘
তিনি আরও বলেন,‘ক্যাপ্টেন শফিক ৩৫০ জন র্যাব সদস্য নিয়ে পিলখানা এলাকায় পৌঁছে গেলেন। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমতি চান, পিলখানায় প্রবেশ করার জন্য। যেটা তিনি পাননি।’
মঈন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তাকে যদি পারমিশন দেওয়া হতো ভেতরে প্রবেশ করার জন্য, বিদ্রোহীরা তখনো সংগঠিত হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতিও করতে পারেনি। ক্যাপ্টেন শফিক নিজেই তাদেরকে মোকাবিলা করতে পারতেন এবং কিছুক্ষণ পরেই আমরা এসে তার সঙ্গে মিলিত হয়ে বিদ্রোহীদের দমন করতে পারতাম। ’
মঈন ইউ আহমেদ সে সময়ে কিছু নতুন তথ্য সামনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘ব্রিগেড কমান্ডারের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসারের নেতৃত্বে ৬৫৫ জন অফিসার সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করেন। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার’। আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বলি, অপারেশন রেস্টোর অর্ডার পরিচালনার শুরুতেই আমাদের একজন সৈনিককে নিহত হতে হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এইমাত্র খবর পেলাম বিদ্রোহীরা অনেক অফিসারকে হত্যা করেছে। ’
মঈন ইউ আহমেদ বলেন, ‘আমি আরও বলি, বিদ্রোহীদের কোনো শর্ত মানা যাবে না। আর আপনি তাদেরকে বলবেন, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আশা করবো একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বের করে যারা এখনো দোষী চিহ্নিত হয়নি, কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা হোক।’