বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এতদিন চিন্তিত ছিলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে কোনো কিছু শুনতে পাচ্ছি না। গতকাল উনি কথা বলেছেন, জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিয়েছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি বলেছেন কবে নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তবে রাজনৈতিক দলের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করবো, প্রধান উপদেষ্টা সে প্রক্রিয়ায় যাবেন। তিনি রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলবেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটি রোডম্যাপ দেবেন, কিন্তু তার মুখ থেকে সেটা শুনতে পাইনি। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের ৯ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণ সভাটির আয়োজন করে জাতীয় পার্টি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রশাসনে আমরা সেই সমস্ত ব্যাক্তিদের দেখতে পাচ্ছি যারা ফ্যাসিবাদ সরকারকে মদদ দিয়েছে, সাহায্য করেছে। এই হত্যার সাথে জড়িতদের চেহারা আর দেখতে চাই না। দয়া করে অতি দ্রুত এদের অপসারণ করে, যারা দেশপ্রেমিক, যারা কাজ করতে চায়, যাদের বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের সুযোগ করে দিন। না হলে এটার জন্য জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না। আনসার সদস্যদের আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সচিবালয়ে ঘেরাও করে আনসার সদস্যদের পোশাক ব্যাবহার একটা গোলযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো। ছাত্ররা সেটা নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনি সংকেত। অর্থাৎ যারা পরাজিত শক্তি, তারা চায় বিভিন্নভাবে এই বিজয়কে নস্যাৎ করতে। আমরা জনগণকে আহবান জানাবো, এই বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যখন ফ্যাসিবাদ ছিলো, তখন দাঁড়ানোর চিন্তাও করতে পারতেন না। এখন সুযোগ এসেছে, সময় দিন নতুন সরকারকে, তারা নিশ্চিয় এই বিষয়গুলো দেখবে, সেভাবে কাজ করবে। কিন্তু এইভাবে ঘেরাও করে বাধ্য করে কোনো কিছু আদায় করা, জনগণ সেটা ভালোভাবে দেখবে না। সবাইকে ধৈর্য ধারণ ধরতে হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যে সরকার এসেছে তারা অবশ্যই কাজ করার জন্য এসেছে। তাদেরকে সে সুযোগ দিতে হবে। দেশের সংকটকাল নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ক্রান্তিকালে আছি। একটি সফল ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এসেছে। আমাদের এই সরকারের প্রতি আস্থা আছে। এই সরকারের প্রধান সারাবিশ্বের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফরকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আমার ছাত্রজীবনে কাজী জাফর আহম্মেদের নাম শুনেছি। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি তখন জাফর ভাই জেলে ছিলেন। একদিন তিনি জেল থেকে বের হলে তার এক বক্তৃতা শুনে আমরা অবাক হয়ে গেছি। তার বক্তৃতা শুনে অনেকে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে। স্মরণ সভাটির সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার।