চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তিন হাজার ৩১৫ জন।
জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রকোপ ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা
কীটতত্ত্ববিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এখনকার বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা দুটিই এডিস প্রজননের জন্য উপযোগী। ধারণা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের শেষ ভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে।
ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘদিন মশা নিয়ে গবেষণা করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এ বছর ডেঙ্গু বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরের কিছু জেলায় যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার, চাঁদপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও খুলনায় ডেঙ্গুর ব্যাপক সংক্রমণ হতে পারে।’
মৃতদের ৫৩ শতাংশ ৪০ ঊর্ধ্ব বয়সী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য মতে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের ৫১.২ শতাংশ নারী এবং ৪৮.৮ শতাংশ পুরুষ। শূন্য থেকে ২০ বছরের কম বয়সে মৃত্যু ২২ শতাংশ। ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সে মৃত্যু ২৪.৩৫ শতাংশ এবং ৪০ ঊর্ধ্ব মৃত্যু ৫৩.৬৫ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি প্রতি ১০০ জনে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নারীর ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার প্রতি ৬৩ জনে একজন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডেঙ্গুর ভয়াবহতার বিপরীতে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা খুব অপ্রতুল। গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে উঠলেও সেখানে যথেষ্ট পরিমাণ জনবল-সরঞ্জাম নেই। শহরাঞ্চলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থাকলেও প্রাথমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো গড়ে ওঠেনি। অর্থাৎ মানুষের হাতের কাছে স্বাস্থ্যসেবা নেই। তাই অসুখ হলেই লোকে বড় বড় হাসপাতালে ভিড় করছে। চিকিৎসাব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া মৃত্যু কমানো সম্ভব নয়।’
ডা. মুশতাক হোসেন আরো বলেন, কোনো দেশে ডেঙ্গু একবার শুরু হলে তা শেষ হয়ে যায় না। তবে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু সে জন্য জরুরি সমন্বিত উদ্যোগ নেই। জনসম্পৃক্ততা নেই। এটি যত দিন করা না যায় মৃত্যু বা আক্রান্ত হওয়া কোনোটাই কমানো সম্ভব নয়।