ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন আহমাদিনেজাদ

ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর এরই মধ্যে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে ইরান। আগামী ২৮ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব এই নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। খবর দ্যা টাইমস অব ইসরায়েল।

এর মধ্যে আসন্ন এ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নাম নিবন্ধন করেছেন দেশটির দুইবারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১২ বছর পর ফের দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শামিল হলেন কট্টরপন্থী এই নেতা।

রবিবার (২ জুন) সকালে ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে তেহরানের নির্বাচনী সদর দপ্তরে উপস্থিত হয়েছিলেন আহমাদিনেজাদ।

রয়টার্স বলছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিবন্ধন করলেও তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেয়া হতে পারে।

ইরানে কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন আর কে পারবেন না, সেটি নির্ধারণ করে ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে গঠিত গার্ডিয়ান কাউন্সিল। এই কাউন্সিল চাইলে তার নিবন্ধন বাতিল করে দিতে পারে। ১১ জুন যাচাই-বাছাই শেষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে গার্ডিয়ান কাউন্সিল।

পেশাগত জীবনে আহমাদিনেজাদ ইরানের রিভোল্যুশনারি গার্ড কোরের সদস্য ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি প্রথমবারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পরপর দুইবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার যে শর্ত তা পূর্ণ হওয়ায় ২০১৩ সালে পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

এরপর ২০১৭ ও ২০২১ সালে আহমাদিনেজাদ ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে সে সময় তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।

সোমবার (৩ জুন) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাম নিবন্ধনের শেষ দিন। এরপর গার্ডিয়ান কাউন্সিল প্রার্থীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করবে এবং ১১ জুন যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে। যোগ্য প্রার্থীরা ২৮ জুন ভোটের আগ পর্যন্ত প্রচারণার জন্য দুই সপ্তাহ সময় পাবেন।

রবিবার তেহরানে নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তরে মনোনয়ন দাখিলের পর আহমাদিনেজাদ বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি ইরানের সমস্যাগুলো সমাধানে মনোযোগ দেবেন। তার কথায়, সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে দেশের সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, তিনি ‘জনগণের অনুরোধে’ আবারো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যোগ দিয়েছেন এবং ‘মানুষের জীবিকা সমস্যার সমাধান, ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি, দুর্নীতির অবসান, সরকারের অত্যধিক হস্তক্ষেপ সীমিত করা, উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন এলাকা উন্মুক্ত করা এবং বিনিয়োগের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির ব্যাপারে সংকল্পবদ্ধ।’

এখন পর্যন্ত সাবেক পারমাণবিক আলোচক সাইদ জালিলি, তেহরানের মেয়র ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আলিরেজা জাকানি, সাবেক পার্লামেন্ট স্পিকার আলি লারিজানি, সাবেক শীর্ষ ব্যাংকার ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী আবদোলনাসের হেমতি এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মাহদি ইসমাইলিসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে যোগ দিয়েছেন।

তবে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার লড়াইয়ে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, যিনি চলতি সপ্তাহের শুরুতে সংসদের স্পিকার পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন, এখনো নিজের পরিকল্পনা স্পষ্ট জানান নি।