ফের কথার লড়াই শুরু শাকিব খান ও শবনম বুবলীর। প্রথমজনের দাবি দ্বিতীয়জনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই, আর দ্বিতীয়জনের দাবি সম্পর্ক এখনও শেষ হয়নি। সদ্য দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুবলীর সঙ্গে সম্পর্ক ও তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওই একই গণমাধ্যমে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে শাকিবের অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেন বুবলী। শাকিবের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে বুবলী বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে কথা বলতেই আমার রুচিতে বাধছে। দেখুন, একটা সম্পর্ক-বিয়ে-সন্তান এগুলো খুব পবিত্র একটি জিনিস। এটাকে যে নোংরাভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাকে নিয়ে আমার সত্যি বারবার কথা বলার আগ্রহ নেই। একজন মেয়ে হিসেবে বিয়ের পর সবসময় আমি চেয়েছি সুন্দরভাবে সংসার করতে, যেটা আপনারা অনেকবার দেখেছেন। আর এই সংসার করতে চাওয়াটাই আমার কাল হলো। এ ছাড়া কোনো স্বামী-স্ত্রী যদি আলাদা হয়ে যায় তাহলে তারা হয় সেপারেটেড না হলে ডিভোর্সড। আমি সেটাই বলেছি যে, ডিভোর্স হলে তো ডিভোর্স লেটার থাকবে। আমি তা পাইনি। তার মানে আমাদের সম্পর্কটা আসলে এখন কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আপনারাই বলুন! আমি কী এখন এটাকে— সেপারেটেড নাকি ডিভোর্সড বলব?’ ওই সাক্ষাৎকারে শাকিব দাবি করেন, বুবলী তাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন। তার এই দাবিকে হাস্যকর বলছেন এই নায়িকা। তার কথায়, ‘এটা খুবই হাস্যকর আর কমন একটা কথা। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তো আরও বেশি। কারণ কোনো পুরুষ কোনো মেয়েকে অপমান করতে চাইলে বা হেয় করতে চাইলে সবার আগে মেয়েটিকে তার চরিত্র নিয়ে আঘাত করে। কারণ, এটার কোনো প্রমাণ দরকার হয় না জাস্ট বলে দিলেই হয় যেটা খুব বাজে মানসিকতার পরিচয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেক বছর ফিল্মে কাজ করি, তার আগে নিউজ প্রেজেন্টার ছিলাম। কেউ কখনও আমাকে নিয়ে বাজে রিউমার পায়নি। কোথাও কোনো আড্ডাতেও আমাকে দেখে না। কারণ আমি ওভাবেই আমার জীবন ধারণ করি। তা ছাড়া সবাই এটা খুব ভালোভাবেই জানেন। না হলে আপনারা এত বছর তো আমাকে দেখছেন, জানেন; কখনও তো এমন কিছু পাননি বা লিখলেন না কারণ আমার বেসিকটা কখনোই উগ্র ধরনের জীবনযাপনের নয়। আর তাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে এটা তার খুব পছন্দের শব্দ মনে হয়। তার জীবনের অনেক ক্ষেত্রে তিনি এটা খুব ব্যবহার করেন যেটা দিয়ে উনি কী বোঝান সেটা উনি নিজেই হয়তো জানেন। নাহলে তার মতো ম্যাচিউর একজন মানুষকে কীভাবে কেউ ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করতে পারে!’ বুবলীর ফ্ল্যাট-গাড়ি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শাকিব। বিষয়টি নিয়ে এ নায়িকা বলেন, ‘দেখুন আমি অনেক বছর ফিল্ম করছি, তার আগে নিউজ পড়েছি, অনেক কালচারাল প্রোগ্রাম করি, বিভিন্ন ওপেনিং শো করি, বিজ্ঞাপন করি, এত বছর সম্মানের সঙ্গে কাজ করে আমার নিজ সামর্থ্য আর পরিবারের হেল্প নিয়ে যতটুকু থাকার ঠিক ততটুকুই আছে। আমার গাড়ির কথা উনি বলছেন সেটা ব্যাংক লোন নিয়ে নেওয়া। সব লোনের কাগজ আমার কাছে আছে। যে শোরুম থেকে নেওয়া সেই শোরুম উনি নিজেও চিনেন। আমার বাসার কথা উনি বলেছেন যেটাতে আমি আম্মু, আব্বু, শেহজাদ, আমার ছোট ভাইসহ পরিবার নিয়ে থাকি। এই বাসা আমার নামেও না, কারণ এটাও লোন নিয়ে করা। আমি আমার ফিল্ম আর বিজ্ঞাপন থেকে কিছু টাকা দিয়ে কিছুটা পরিবার থেকে হেল্প নিয়ে বাকিটা লোন করে গাড়ি কিনেছি। গাড়ি আর বাসার প্রতি মাসের ইনস্টলমেন্টের হিসাব আমার কাছে আছে। আমি এত বছর কাজ করে লোন করে কিছু করতে গেলেও সমস্যা? আমার আর সন্তানের জন্য তো আমাকে কাজ করতে হয় কারণ সব দায়িত্ব আমার একার। উনি এসবেও নোংরামি করতে চান? তাহলে নিজে কেন কোনো দায়িত্ব নেননি?’ কয়েকদিন আগে এক ফেসবুক পোস্টে বুবলী দাবি করেন, তিনি গেল রোজার ঈদে শাকিবের বাড়িতে গেছেন। তার হাতের রান্না খাইয়েছেন তাকে। এমনকি একসঙ্গে সময়ও কাটিয়েছেন তারা। তবে শাকিব তা অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে বুবলী বলেন, ‘সবার আগে আমার কাছে ব্যক্তিত্ব, তার পর অন্য কিছু। আমার নিজেরও তো আত্মসম্মানবোধ আছে, জোর করে কেন যাব? আমি কখনও জোর করে তার বাসায় যাইনি, আমি ওই ধরনের মানুষই নই। শেহজাদকে নিয়ে আমি তার ইচ্ছাতেই ওই বাসায় যেতাম। আর শেহজাদকে কখনও একা ন্যানি দিয়ে পাঠাইনি। ওখানে সবসময় আমিই নিয়ে যাই, ন্যানি সঙ্গে থাকে। আর উনি বললেন, তার বাসায় নাকি কী সিনক্রিয়েট করে আমাকে বের করে দিয়েছে। আমার সঙ্গে কে নাকি খারাপ ব্যবহারও করেছে? এটার তো প্রশ্নই ওঠে না, চাইলে আপনারা তার ওখানে সিসি ক্যামেরা চেক করেন। তিনি তো দূরের কথা, তার সামনে কেউ আমার সঙ্গে বাজে সিনক্রিয়েট করার সাহস নেই। ওরকম হলে তিনি নিজেই তাদের বকা দিতেন।’ বুবলীর মতে, তাকে সামাজিকভাবে হেয় করছেন শাকিব। এসব তাকে ও তার সন্তানকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। তাই বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাই শিগগিরই আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।