রোজার মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, এবার ব্যতিক্রম: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে ৯০ ভাগের বেশি মুসলমান। অতীতে আমরা দেখেছি, রমজান মাসজুড়ে সাধারণত সারা দেশের সব স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ থাকে। এবার তার ব্যতিক্রম হলো। Google news বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ডামি সরকার’ রমজানে অর্ধেক মাস দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয় নিয়ে কী কারণে বিতর্ক তৈরি করতে চায়? আপনারা লক্ষ করবেন, রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ অর্থাৎ বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় সংস্কৃতি, বিশ্বাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করছে। সরকারের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের আপামর জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি নিয়ে ঠাট্টা করতেও এখন আর তাদের বিবেকে বাধে না।

তিনি বলেন, সরকার নিম্নমানের পঁচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে রোজাদারদের উপহাস করেছে। রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ায় ধর্মীয় অনুভূতি কাজ করে। অথচ, বর্তমান সরকারের একজন মন্ত্রী ইফতার নিয়ে কতই না উপদেশ দিচ্ছেন জনগণকে। যেহেতু, এরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি বা মন্ত্রী হননি, এ কারণে তারা রোজাদার মানুষদের নিয়ে মশকরা করছেন।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, পবিত্র রমজান মাসে খেজুর আমদানির জন্য ভর্তুকি দূরে থাক, উল্টো খেজুরকে বিলাসী পণ্য আখ্যায়িত করে খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়েছে বিনাভোটের এই সরকার। খেজুরের ওপর ভর্তুকি না দিলেও সরকার শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংককে। লুটেরা চক্র ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। তিনি বলেন, শুধু খেজুর নয়, সরকারের সিন্ডিকেটবান্ধব লুটপাটের নীতি ও চরম ব্যর্থতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। বাজারে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, চিনি, আটা, ময়দা, ছোলা, বেসন, লেবু, শসা, মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম মানুষের আয় থেকে দুস্তর ব্যবধান। দুর্নীতিবাজ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এ কারণে যে, সিন্ডিকেটবাজরা সব সরকারের আশ্রিত লোক। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে হাজার হাজার মাইল দূরে কোথায় কোন দেশে যুদ্ধ হচ্ছে, দুর্নীতিবাজ সরকার সেসব অজুহাত তুলছে।

প্রতিদিন দাম বাড়ার নানান ধরনের উদ্ভট কারণ আবিস্কারে ব্যস্ত তারা। তিনি আরও বলেন, সারাবিশ্বে বিভিন্ন জিনিসের দাম কমলেও বাংলাদেশে প্রতিদিন কেবল বাড়াচ্ছে জনগণের ‘পকেট কাটা সরকার’। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়া-কমার সঙ্গে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই। দেশে জিনিসপত্র দাম বাড়া-কমার সঙ্গে সম্পর্ক আওয়ামী লুটেরাদের সঙ্গে। আওয়ামী লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দমন করা না গেলে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসবে না।