ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ২৪ মার্চ

আগামী ১০ এপ্রিলকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দিন ধরে ঈদযাত্রায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এবারই প্রথম ৭ দিনের টিকিট বিক্রি করবে তারা। সেই হিসাবে এই ট্রেন যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২৪ মার্চ। যাত্রীদের সুবিধার্থে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। এর আগে ঈদ উপলক্ষে ৫ দিনের টিকিট বিক্রি করত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। সংবাদ সম্মেলনে ঈদ যাত্রা নিয়ে রেলের সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন রেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার শাহাদাত আলী।

সরদার শাহাদাত বলেন, ঈদের আগে আন্তনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৪ মার্চ; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৬ মার্চ; ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ; ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ; ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চ।

তিনি আরও জানান, এ ছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলের টিকিট সকাল ৮ থেকে ও পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে। ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হবে।

 

বুধবার দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, অগ্রিম ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ৩ এপ্রিল থেকে। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রিম ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। ৩ এপ্রিল পাওয়া যাবে ১৩ এপ্রিলের টিকিট। এভাবে পর্যায়ক্রমে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাবে।

সাধারণত যাত্রার ১০ দিন আগে অগ্রিম টিকিট শুরু করে রেল। এবারও ঈদযাত্রার কোনও টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করা হবে না। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেই শতভাগ টিকিট বিক্রি হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট, রেল সেবা অ্যাপ ও সহজ ডটকমের প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে

সরদার শাহাদাত আলী বলেন, গতবারের মতো এবারও ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তনগর ট্রেনে মোট আসনসংখ্যা হবে ৩৩ হাজার ৫০০টি। ঈদ উপলক্ষে ৩ এপ্রিল থেকে সকল আন্তনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ডে অফ প্রত্যাহার করা হব। ঈদ উপলক্ষে ২৪৮টি লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর নীলসাগর ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের পরিবর্তে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে চলাচল করবে। উক্ত ট্রেন দুটি বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে না। ঈদ-উল-ফিতরের দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনও আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

তিনি জানান, আন্তর্দেশীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন জলপাইগুড়ি থেকে ১৭ এপ্রিল চলাচল করবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টিকিটধারী যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার্থে ঈদের আগে ৩ এপ্রিল জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ঢাকামুখী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে জয়দেবপুরমুখী আন্তঃজোনাল আন্তঃনগর ট্রেনে কোনও টিকিট ইস্যু করা হবে না। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে বিমানবন্দরগামী আন্তঃনগর ট্রেনে কোনও টিকিট ইস্যু করা হবে না।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি, রংপুর, চিলাহাটি ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনসমূহের ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রা বিরতি থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যান্যরা।