শ্রেণিকক্ষে নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে ৫ বছরের জন্য অব্যাহতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন ওই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. আশরাফ-উজ-জামান।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. আশরাফ-উজ-জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি অ্যাকাডেমিক সভা আহ্বান করি। সেখানে অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে আগামী ৫ বছরের জন্য সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্তটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠাব। বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও আমরা ডেকেছি, তারা মেনে নিয়েছে। আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা যথাসময়ে চলবে।
এর আগে, গত সোমবার (১১ মার্চ) সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করে ওই শিক্ষকের বিচারের দাবি জানান।
ওই ছাত্রী পোস্টে লিখেছিলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের কাজ কী? অবিবাহিত লুচ্চা শিক্ষকদের কেন ক্লাস দেওয়া হয় যারা বোরখা এবং হিজাবের মতো এত সেনসিটিভ একটা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে? ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হয়ে তার এই সাহস কীভাবে হলো? নেকাব খুলতে বাধ্য করা, পর্দানশীন মেয়েদের হেনস্তা করা, ‘মাথা থেকে পা পর্যন্ত প্যাকেট হয়ে এসেছ’, ট্যুরের নাম দিয়ে নিয়ে গিয়ে বাংলা-হিন্দি গানে নিজে নাচা ও ছাত্রীদের নাচানো’ এসব কিছু এই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা কীভাবে করে?
সেখানে আরও লেখা আছে, সংখ্যাটা যদি কমও হয়, অন্য শিক্ষকরা কি এতটাই জিম্মি তাদের কাছে? নাকি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ইসলামি ভাবধারার বাইরের শিক্ষক বেশি? এই শিক্ষককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বলছি তোমরা এক হও। এসকল বেয়াদব শিক্ষকদের সকল ইয়ারে ক্লাস থেকে বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি। চেয়ারম্যান স্যার এবং ডিন’স স্যারের কাছে এর একটা সুষ্ঠু ফয়সালা কামনা করছি’।
ওইদিন বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দুদিনের আলটিমেটাম দিয়ে
মানববন্ধন করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন নামের এক সংগঠন আবারও মানববন্ধন করেন। পরে দুপুরে অনুষ্ঠিত অ্যাকাডেমিক সভায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে ৫ বছরের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।