প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তিটাই বড়। নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। এ জন্য সরকারি উচ্চপদে নারীদের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার।
আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ’৯৬ সালের আগে উচ্চ আদালত নারী বিচারক ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে উচ্চ আদালতে নারী বিচারক নিয়োগ দেয়। প্রতিটি জায়গায় বাংলাদেশের নারীরা সাফল্য পাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এভারেস্ট জয়, ক্রীড়াসহ সবক্ষেত্রে এগিয়ে আছে বাংলাদেশের নারীরা। সরকার চায় নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত হোক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা আমাদের একটা সংবিধান দিয়েছেন, সেই সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছেন।
নারীদের চাকরি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটা নির্দিষ্ট করেছেন, চাকরির ক্ষেত্রে যাতে নারীরা সমান সুযোগ পেতে পারে। সংসদের সংক্ষরিত নারী আসন দিয়েছিলেন যাতে করে নারী নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে। সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতার ডাকে এ দেশের মানুষ অস্ত্র কাঁধে নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছে। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় পাকিস্তানের শাসকরা আল বদর বাহিনী, রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলে।
আমাদের কিছু দেশীয় দালাল, তারা নারীদের ধরে নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে দিয়ে দিত। দিনের পর দিন তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চলতো। দিনের পর দিন তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন হয়। সে নির্যাতিত মা-বোনদের আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, নির্যাতিত নারীদের স্বাধীনতার পর উদ্ধার করা হয়। নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য জাতির পিতা শেখ মুজিব পুনর্বাসন বোর্ড করে দেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার, নার্স নিয়ে আসেন তাদের চিকিৎসা করাতে। কারণ, অনেকে তখন অন্তঃসত্ত্বা, অনেকের অবস্থা খারাপ ছিল। শারীরিক মানসিকভাবে তাদের চিকিৎসা এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেন। আমার মা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক মেয়েকে বিয়ে দেন।
এক সাথে অনেকের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেন। যারা বিয়ে করেন তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা নাম দিয়ে তাদের সম্মাননা দিয়েছেন। আমরা তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছি, তাদের অবদান ভোলার নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ৫ নারীকে জয়িতা সম্মাননা দেওয়া হয়েছে এই অনুষ্ঠানে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন। যারা সম্মাননা পেয়েছেন তারা হলেন ময়মনসিংহের আনার কলি, রাজশাহীর কল্যাণী মিনজি, সিলেটের চা শ্রমিক কমলী রবিদাশ, বরগুনার জাহানারা বেগম ও খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।