রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের চার দিনের রিমান্ড গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে। আজ রবিবার তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এ ব্যাপারে আদালতে মোহাম্মদপুর থানার জেনারেল রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিয়মানুযায়ী আসামিদের রিমান্ড শনিবার শেষ হয়েছে।রবিবার আসামিদের আদালতে হাজির করতে পারে পুলিশ।
এর আগে গত মঙ্গলবার মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালত তাঁদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি তখন তদন্ত করছিল মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায় পুলিশ সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে গত বৃহস্পতিবার আসামিদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।এরপর থানা-পুলিশের কাছে এড়িয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে ডিবি। আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে কী ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ।জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তাঁদের উভয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।পুরো ঘটনা তদন্তে মামলাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে ডিবি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায়। আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে আদালত তাঁদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
সে সময় প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ায় তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে আসামিদের কাছ থেকে অধিকতর তথ্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ডিবিপ্রধান বলেন, ডিবি এই মামলাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। বরাবরই যেকোনো মামলার মতোই সুষ্ঠু ও গভীরতর তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য তুলে আনতে ডিবি পুলিশ কাজ করছে। তাঁদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রযুক্তিগতভাবে এবং অন্যান্য মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে চায় ডিবি।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের ফ্ল্যাট থেকে গত বছরও ফেরদৌসী (৭) নামের এক শিশু গৃহকর্মী পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। একই বাসায় ছয় মাসের মধ্যে পর পর দুটি ঘটনা অত্যন্ত রহস্যজনক। গত বছর পড়ে যাওয়া ফেরদৌসী প্রাণে বেঁচে গেলেও গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রীতি ওরাং পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। একই বাসা থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে এ ধরনের ঘটনা কেন, এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে আনতে তৎপর ডিবি।