ডেঙ্গু আবার ঊর্ধ্বমুখী

বিগত বছরগুলোয় লক্ষ করা গেছে, মে মাসের পর দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে দুই হাজারেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত বছর ডেঙ্গুতে দেশে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কাজেই ডেঙ্গু মোকাবিলায় এখন থেকেই জোর তৎপরতা শুরু করতে হবে। এডিস মশার আচরণে পরিবর্তন এসেছে। এ মশা শুধু পরিষ্কার পানিতেই নয়, দূষিত পানি, এমনকি লোনা পানিতেও বেঁচে থাকতে সক্ষম। রাতের বেলায়ও মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায় এরা। এডিস মশার আচরণ ও জীবনধারায় কী কী পরিবর্তন এসেছে, এ বিষয়ে গবেষণা আরও বাড়াতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের কাজটি কঠিন। কাজেই মানুষ সচেতন ও দায়িত্বশীল না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা থেকেই যায়। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ডেঙ্গু পরবর্তী মহামারি হয়ে ওঠার আগেই মোকাবিলা করতে হবে। ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকে তিনি বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন বলে জানিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। গত বছর দেশে যখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল, তখন ডাব, পেঁপে, কমলা-এসব ফলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল। এবার যেন এমনটি না হয়, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।ডেঙ্গু রোগীর সাধারণ উপসর্গগুলোর সঙ্গে মানুষ পরিচিত হলেও গত বছর এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণ ছিল ডেঙ্গুর ধরনে পরিবর্তন। এ রোগের নতুন উপসর্গগুলোর সঙ্গে মানুষ পরিচিত নয়। বস্তুত গত বছর অসচেতনতার কারণে অনেক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কাজেই কারও জ্বর হলে দেরি না করে  চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। মানুষ সচেতন না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত বছরের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। রোগটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার খবর নতুন নয়। জানা যায়, গাছের কোটরেও ডেঙ্গুর লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। কাজেই এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিসের উৎপাত থাকবে বছরজুড়েই। কাজেই ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা পেতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেভাবেই হোক ডেঙ্গুর উৎস পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে।