রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে ‘স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়’ করা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে ফিজিবিলিটি টেস্টের (বাস্তবায়নযোগ্যতা যাচাই) আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সাত দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৈঠকের পরে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মতিউর রহমান রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরে আসে প্রতিনিধিদলটি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সংবাদ সম্মেলন করেন বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে তিতুমীর ঐক্যের অন্যতম সমন্বয়ক মাহমুদুল হাসান বলেছেন, ‘‘কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি না। এই প্রেস কনফারেন্সের পর থেকে রাষ্ট্রপক্ষের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সাত দিন আমরা কোনো আন্দোলন রাস্তায় করব না। একইসঙ্গে ক্লোজডাউন কর্মসূচি থাকছে না। এই সাত দিন আমরা থাকছি আমরা ক্যাম্পাসে কাউন্সেলিং করব, ক্যাম্পেইন করব। যদি সাত দিন পর দেখি, কোনোরকম অগ্রগতি নেই; তখন আমরা পূর্বের কর্মসূচিতে ফিরে যাবো। ‘ক্লোজডাউন’ এবং ‘মহাখালী টু বারাসাত ব্লকেড’ কর্মসূচিতে ফিরব। তখন জনদুর্ভোগের দায় তিতুমীর কলেজের না, সেই দায়ভার হবে সরকারের।’’
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘পুলিশ এবং তাদের জলকামানের উপস্থিতি সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নিচ্ছেন না।’’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন হুট করে আসেনি। এটা ২৭ বছরের আন্দোলন। ২৭ বছর ধরে আমরা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য আন্দোলন করছি।’’
শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটা কমিটি গঠন করা হবে। তারা ফিজিবিলিটি টেস্ট করবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া খুব কঠিন। এছাড়া, তিতুমীর কলেজের ১০ একর জমি রয়েছে। কমিটি সব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত জানাবে।’’
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি পর্যবেক্ষণ শেষ করবে এবং একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ঢাকা উত্তরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় এ এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সুনির্দিষ্ট সুযোগের অভাব রয়েছে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করলে এই অভাব পূরণ হতে পারে।
দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীদের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে যায়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন—মাহমুদ হাসান মুক্তার, মোশাররফ রাব্বি, নেয়েক নূর মোহাম্মদ, আব্দুল হামিদ, নূরুদ্দিন জিসান, মতিউর রহমান জয়, জাহাঙ্গীর সানি, মেহেদী হাসান মাল, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ বেল্লাল, আল নোমান নিরব, হাবিবুল্লাহ রনি, তোয়াহা এবং কাউসার।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি তিতুমীর কলেজের ক্যাম্পাসের ভেতরে ফটকের কাছে অবস্থান করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন।