নিজস্ব প্রতিবেদক:মৌলভীবাজারে নবাগত জেলা প্রশাসক ড. ঊর্মি বিনতে সালাম মতবিনিময় করেছেন জেলা সদরে কর্মরত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে।
মঙ্গলবার ৪ এপ্রিল দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কার্য দিবসের প্রথমদিনে ড. উর্মি বিনতে সালাম সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রভাংশু সোম মহান এর সঞ্চলনায় পরিচয় পর্ব শেষে বক্তব্য রাখেন নবাগত জেলা প্রশাসক ড.ঊর্মি বিনতে সালাম। পরে মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন চ্যানেল আই প্রতিনিধি ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ সালাম,প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম শেফুল, দৈনিক বাংলার দিন পত্রিকার সম্পাদক বকসী ইকবাল আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক সরওয়ার আহমদ, এনটিভির স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এস এম উমেদ আলী, সময় টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাহ অলিদুর রহমান, খবরপত্র পত্রিকার প্রতিনিধি শ.ই.সরকার জবলু, এখন টেলিভিশনের এম এ হামিদ, একাত্তর টিভি প্রতিনিধি আহমেদ ফারুক মিল্লাদ, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত, একুশে টিভির প্রতিনিধি বিকুল চক্রবর্তী, দেশ টিভি প্রতিনিধি সালেহ এলাহী কুটি, মাইটিভি প্রতিনিধি সঞ্জয় দত্ত, যমুনা টিভি প্রতিনিধি ও ইমজার সাধারণ সম্পাদক আফরোজ আহমদ সহ অন্যান্যরা।
গণমাধ্যমকর্মীরা জেলার চলমান নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা,পর্যটন, ইপিজেড, মেডিকেল কলেজ,পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়, শমসেরনগর এয়ারপোর্ট, প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মূল্যায়ণ, সড়ক ও পর্যটন স্পটের উন্নয়ন, এ জেলায় আগত পর্যটকদের যাতায়াত ও রেস্ট হাউজগুলোর অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, সিএনজি চালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন নিয়ন্ত্রণ, হাওর ও নদী শাসন, সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসকের প্রচেষ্ঠায় প্রতিষ্ঠিত জেলাবাসীর কাঙ্খিত (ইংলিশ মিডিয়াম) কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আগর আতর, রাবার ও চা শিল্পসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
নবাগত জেলা প্রশাসক সবার মতামত গ্রহণ করে বলেন সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা ও প্রচেষ্ঠায় জেলার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তোরণে কাজ করার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। চায়ের রাজ্য, প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত,পাহাড়ি টিলা ও নদী হাওর বেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের জেলার সকল সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে বয়ে চলা সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সকলের সহযোগিতা চান।
ড. উর্মি বিনতে সালামের জীবনবৃত্তান্ত
ড. উর্মি বিনতে সালাম ১৯৮১ সালে পহেলা আগস্ট কুমিল্লা জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মোহাম্মাদ আব্দুস সালাম এবং মাতার নাম হালিমা আক্তার।
ড. উর্মি বিনতে সালাম বিসিএস ২৫তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। তিনি ২০০৬ সালের ২১ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করেন।
তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে রাজশাহী বিভাগে ন্যস্ত হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, বগুড়া-তে তার শিক্ষানবিশকাল অতিবাহিত করেন। এরপর নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর একজন সফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময়ে কর্মরত ছিলেন।
ড. উর্মি বিনতে সালামের স্বামী ড. মো. নাজমুল কবির চৌধুরী ঢাকা কলেজের রসায়ন বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তারা দুই পুত্র সন্তানের জনক-জননী। বড় ছেলে নাবহান কবির চৌধুরী এবং ছোট ছেলে নাজহান চৌধুরী।
উর্মি বিনতে সালামের শিক্ষাজীবন অত্যন্ত সমৃদ্ধ। তিনি ১৯৯৬ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ হতে ২০০২ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ২০০৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পাহাং থেকে Humanities Technology বিষয়ে গবেষণা করে ২০১৫ সালে ডক্টরেট ডিগ্রিতে ভূষিত হন।
ড. উর্মি বিনতে সালাম সফলতার সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছেন। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, আইন ও প্রশাসন কোর্সসহ বিয়াম ফাউন্ডেশন হতে Negotiation Technical and Conflict Management প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এছাড়া, মালয়েশিয়াতে Doctor of Philosophy Program-এর অধীনে “Technology Management” বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ভারতে Mid career Training সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনের প্রয়োজনে মালয়েশিয়া, ইতালি ও থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন।
শিক্ষা ও কর্মজীবনে অর্জনের ডালাটিও ঋদ্ধ। ২০১৩ সালে মালয়েশিয়াতে Creation, Innovation, Technology and Research Expo-তে রৌপ্য পদক জয় করেন। একই বছর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে PECIPTA কনভেনশনে ব্রোঞ্জ পদকে ভূষিত হন। প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ অঞ্চলে শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার-এর সম্মানপ্রাপ্ত হন। ২০১৮ সালের Digital Innovation Fair-এ শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সম্মানিত হন।