লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে শনিবার থেকে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’

লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে চতুর্থ বারের মতো চালু হচ্ছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কম খরচে আম পরিবহনের জন্য চলবে বিশেষ এই ট্রেনটি।

আগামী শনিবার (২০ মে) থেকে এই ট্রেনটি চালু করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ৫ মে কম ভাড়ায় আম পরিবহনের জন্য প্রথমবারের মতো ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু হয়। ট্রেনটি ওই বছরের ২১ জুলাই পর্যন্ত আম পরিবহন করে। এ সময় রেলওয়ে আয় করে ২ লাখ ১১ হাজার ৪৫৮ টাকা। দ্বিতীয়বার ২০২১ সালে ২৭ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ম্যাংগো ট্রেনে আম পরিবহন করে রেলের আয় হয় ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯২০ টাকা।

২০২২ সালের ১৩ জুন ম্যাংগো ট্রেন চালু হয়। আমের ভরা মৌসুমে ট্রেনটি চালু না হওয়ায় মাত্র ১১ দিন আম পরিবহন করে ট্রেনটি। এসময় রেলওয়ের আয় হয় ৩ লাখ ১৯ হাজার ২৬৫ টাকা। ট্রেনটির ৫টি ওয়াগনের প্রতিটির বহন ক্ষমতা ছিল ৪৩ হাজার কেজি। ট্রেনের প্রতিদিনের পরিচালনা খরচ ছিলো ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ফলে প্রতিদিনই রেলওয়ের অন্তত ৭০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছিল।

রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এবারও ট্রেনটি চালু করা হচ্ছে লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে। রেলওয়ের ক্ষতি হলেও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু হলে আম ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। বিশেষ করে আমকেন্দ্রীক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তরা কম খরচে আম পাঠানোর জন্য ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনকেই বেছে নেন।
গত সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় উৎপাদিত আম পরিবহনের বিষয়ে আমচাষি, বাগানমালিক, উদ্যোক্তা, কুরিয়ার সাভির্সের প্রতিনিধিসহ রেলের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে চলতি মে মাসের ২০ তারিখের পর থেকে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু করার প্রস্তাব দেন জেলা প্রশাসক।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমা ল জোনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় প্রতি কেজি আম নিতে ব্যবসায়ীদের খরচ হয়েছিল ১ টাকা ৩১ পয়সা। রাজশাহী থেকে এক কেজি আমের ভাড়া ছিলো ১ টাকা ১৭ পয়সা। এবারও আগের ভাড়ায় থাকবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমা ল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন ম্যাংগো ট্রেন চালুর বিষয়ে বলেন, গত ৩ বছরের মতো এবারও কম ভাড়াতে ঢাকায় আম পরিবহনের জন্য ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হবে। গত বছর ট্রেনটিতে পণ্যবাহী ওয়াগন ছিলো ৫টি। ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এবার থাকবে ৭-৯টি ওয়াগন। প্রয়োজনে আরও ওয়াগন বাড়ানো হবে। আম পরিবহনের সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে দুইটি ট্রেন থাকবে একটি ট্রেন যাবে, আরেকটি আসবে। এই ট্রেনে আম ছাড়াও বিভিন্ন ফলমূল ও কৃষিপণ্য পাঠাতে পারবেন কৃষক ও উদ্যোক্তারা।

ম্যাংগো ট্রেনে আম পরিবহনে ব্যবসায়ীদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি রেলেওয়ের আশানুরূপ আয় হয় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি চালু হচ্ছে। যাতে করে আম ব্যবসায়ীরা কম খরচে আর কম সময়ে মধ্যে ঢাকাতে আম পরিবহন করে লাভবান হন।