কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া চিকিৎসাধীন ছয় বছর বয়সী শিশু রিয়া ঘোষ মারা গেছে। গত শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদরের নয়ামাটি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। সে সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাসার ছাদে ছিল রিয়া। হঠাৎ গুলি এসে লাগে প্রথম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর শরীরে। পাঁচ দিন পর গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। শিশু রিয়া ছাড়াও গতকাল ঢামেক হাসপাতালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় আহত চিকিৎসাধীন আরও দুজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন সাজেদুর রজমান ওমর (২১) ও শাজাহান (২২)।
এ ছাড়া ঢাকার সাভারে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া তুহিন আহমেদ (২৬) নামে চিকিৎসাধীন এক যুবক মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতায় এ নিয়ে ১৪৪ জন মারা গেল।
নিহত শিশু রিয়ার বাবার নাম দীপক কুমার ঘোষ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। আমাদের চারতলা বাসার ছাদে আরও অনেকের সঙ্গে গিয়েছিল আমার মেয়েটা। হঠাৎ একটি গুলি এসে লাগে তার গায়ে। আজ (গতকাল) মারা গেল আমার মেয়েটা।’
একইদিন ঢামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া সাজেদুর ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি ইন্টারনেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গত রবিবার বাসার সামনে বের হলে তার মাথায় গুলি লাগে। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরেক নিহত শাজাহান রাজধানীর মহাখালীর এসকে টাওয়ারের একটি কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তার বাবার নাম মিল্লাদ। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকাপাড়ায়। গত ১৯ জুলাই মহাখালী এলাকায় তার পেটে ও ডান হাতে গুলি লাগে। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সাভারে নিহত তুহিনের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ইরতা গ্রামে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্বজনরা জানান, গত রবিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তুহিন।