বশেমুরবিপ্রবিতে জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়র নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থার অভিযোগের  ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ 

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ আচরণ ও তাদেরকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এ.এস.ভি.এম) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বিরসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে ।
ঐ ঘটনায় সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাত ৯ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কয়েকঘন্টা যাবত কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৬ জন মেয়ে ও একজন ছেলে ক্যাম্পাস জীবনে শেষ বাস ভ্রমণ স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে গান গেয়ে মজা করতে থাকে। এসময় এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাদেরকে আস্তে কথা বলতে বলেন। আস্তে কথা বলতে বলায় ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক মেয়ে শিক্ষার্থী তাকে বাসের পিছনে যেয়ে বসতে বলেন। পিছনে যেয়ে বসতে বলায় সে ঐ মেয়েদের বলেন, বাস কি গান বা গল্প করার জায়গা? এইটা কি পাবলিক বাস? আপনারা মনে হচ্ছে ভার্সিটি বাসে ১ম উঠছেন আজ। ম্যানার আছে? কিভাবে পাবলিক বাসে গায়? যা ইচ্ছা তাই করবে?
এই ঘটনার পর বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে এএসভিএম বিভাগের ঐ শিক্ষার্থীকে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে নিয়ে যায়। যার মাধ্যমে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষ স্থলে প্রক্টর, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এন্তাদুজ্জামান জনি এবং মো: মোস্তফা কামাল তাদের থামাতে আসলে তাদের উপরও আক্রমণের ঘটনা ঘটে ।
এছাড়াও সংঘর্ষে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সজীব ও এএসভিএম বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ আহত হলে তাদের গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়।
এই হামলার সাথে জড়িত থাকায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, এএসভিএম বিভাগের শুভ  (১৯-২০), নাহিদ (২০-২১), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আলিফ (২০-২১), রবিউল (২০-২১), এবং আনোয়ার (১৯-২০)। এ ছাড়া ইতিহাস বিভাগের নাহিদ (১৯-২০), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শফিক (১৯-২০) এবং বাংলা বিভাগের ইফতি (১৯-২০)।
সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে জানা যায়। এই ঘটনায় প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, “এএসভিএম এর শুভ (১৮-১৯), ইতিহাস বিভাগের নাহিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শফিকের নেতৃত্বে দুই শিক্ষক হামলার শিকার হয়েছেন। আমি উপস্থিত আছি এটা তারা দেখেও শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়েছে। “
এ ছাড়াও প্রক্টর কামরুজ্জামান ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে অপরাধীর বিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন ” তোমরা এতো উত্তেজিত হলে হবে না। আমি নিজেও দেখেছি। একজন শিক্ষকের উপর ক্ষিপ্ত হওয়া মানে আমার উপরও ক্ষিপ্ত হওয়া। তোমরা শান্ত হও অবশ্যই বিচার করা হবে। “
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক এন্তাদুজ্জামান জনি বলেন ” প্রক্টর স্যার তোমাদেরকে অপরাধীদের বিচার করা আশ্বাস দিয়েছেন। তোমাদের কাছে অনুরোধ তোমরা আজ কিছু করো না। আগামীকাল যদি কোন বিচার না হয় তোমরা  বিবেচনা করো। অন্তত আজ কিছু করো না। “