বন্যার মধ্যেই সিলেটে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু

বন্যার কারণে স্থগিত থাকা সিলেট শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিলেট বিভাগ বাদে দেশে অন্যান্য জায়গায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ৩০ জুন থেকে। আজ মঙ্গলবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েই সিলেট বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলো। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চার জেলার ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের ৮২ হাজার ৭৯৫ জন শিক্ষার্থী এবার এইচএসসিতে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে যাতে বিঘ্ন না ঘটে এবং নিরাপত্তা বিবেচনায় কেন্দ্রের ২০০ গজে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। এ ছাড়া সিলেট নগর ও শহরের ২৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে সমাবেশ ও মিছিলসহ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বিভাগের চার জেলায় ৮৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে সিলেটে ৩৩টি, সুনামগঞ্জে ২২টি, মৌলভীবাজারে ১৪টি ও হবিগঞ্জে ১৮টি। আগের রুটিন অনুযায়ী অন্য বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার পর ১৩ আগস্ট থেকে স্থগিত হওয়া চারটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার নতুন রুটিনও প্রকাশ করেছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। নতুন রুটিনে চারটি বিষয়ের পরীক্ষা আগামী ১৩, ১৮, ২০ ও ২২ আগস্ট হবে। অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা আগের রুটিন অনুযায়ী হবে। আগের রুটিনে ৩০ জুন বাংলা প্রথম পত্র, ২ জুলাই বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ৪ জুলাই ইংরেজি প্রথম পত্র ও ৭ জুলাই ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। এখন ১৩ আগস্ট বাংলা প্রথম পত্র, ১৮ আগস্ট বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ২০ আগস্ট ইংরেজি প্রথম পত্র ও ২২ আগস্ট ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সুরমা এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বেশিরভাগ পয়েন্টে বিপদসীমার নিচে। তবে কুশিয়ারা নদীর আমলসিদ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। আর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৪ সেন্টিমিটার উপরে। অভিভাবকদের দাবি, বন্যায় ঘরে পানি চলে আসায় পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারেনি। আরো কিছুদিন সময় পেলে তারা আরেকটু ভালো করতে পারতেন। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার হলের ভেতরে কোথাও পানি নেই। তাই পরীক্ষায় কোনো প্রভাব পড়বে না। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কেন্দ্রের আশপাশে পানি থাকলেও কোনো কেন্দ্রের মধ্যেই পানি নেই। গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সবশেষ ১৭ জুন শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সিলেটে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়। এতে সিলেট নগরীর ২৪টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ১৩টি উপজেলা প্লাবিত হয়। এ অবস্থায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট বিভাগের এইচএসসি, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে।