প্রশ্নফাঁসের সব টাকা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছি: আবেদ আলী

বিসিএস পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে পিএসসির ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আবেদ আলীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রশ্নফাঁসে কত টাকা ইনকাম করেছেন? জবাবে আবেদ আলী বলেন, ‌‌‘প্রশ্নফাঁসে যত টাকা কামাই করেছি, সব খরচ করেছি আল্লাহর রাস্তায়।’

গত ১২ জুন আবদে আলী তার ফেসবুকের এক পোষ্টে লিখেন, ‘আমার জীবনে কোনোদিন অসদুপায় অবলম্বন করিনি। গায়ে খেটে ভাগ্য পরিবর্তন করেছি’

রবিবার রাতে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি।

তবে পিএসসির প্রশ্নফাঁসের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সবচেয়ে যে নামটি আলোচনায় এসেছে তিনি হচ্ছেন পিএসসির গাড়ি চালক আবেদ আলী। পিএসসির এই গাড়ি চালকের নাম আসার পরপরই সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সন্ধান মেলে আবেদ আলীর অঢেল সম্পদের।

সোমবার সকাল থেকে আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের নানান কর্মকাণ্ডের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই বাবা-ছেলেকেও গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৈয়দ আবেদ আলীর ব্যক্তিগত প্রোফাইল ঘেটে দেখা যায়, রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড, দান খয়রাত ও পরহেজগারির নানা খবর।

সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তার বিপুল বিত্তবৈভবের খবর। ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার ও সম্পদের তথ্য মিলেছে তারই ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিত্তবৈভব বানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

সবশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠবস করতেন তিনি। সেসব ছবিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।

প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। ছেলে ছাত্রলীগ নেতা, পড়েছেন বিদেশে, এরপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার ভেতর তার দুটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে আলিশান বাড়ি রয়েছে এমন তথ্যও সামনে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র আট বছর বয়সে জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী জীবন। প্রথমে সেখানেই কুলির কাজ করতেন। এক সময় ফুটপাতে ঘুমিয়ে কষ্ট করেছেন তিনি। এরপর গাড়ি চালানো শিখে চাকরি নেন পিএসসিতে। তারপরই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অর্জন করেছেন বিপুল সম্পদ। সঙ্গে ক্ষমতাও।