নইন আবু নাঈম তালুকদার,শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ। সম্প্রতি দুইজন চিকিৎসক বদলি এবং দুইজন চিকিৎসক নিয়মিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বেতন ভাতা তুললেও প্রায় তিন বছর ধরে ডেপুটেশনে রয়েছে ঢাকা ও খুলনায়। এতে অসহায় রোগীরা চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আবার অনেকে বেশি টাকা খরচ করে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অন্য দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ প্রিয় গোপাল বিশ^াস প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত ও বিভিন্ন সময় সরকারি ট্রেনিং থাকায় রোগী দেখার সুযোগ কম থাকলেও তিনি চেষ্টায় ত্রæটি করেন না। অন্য দিকে মেডিকেল অফিসার ডা. কেয়ামনি মাতৃত্ব জনিত ছুটিতে থাকায় আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসফাক হোসেন সহ তিনজন চিকিৎসকের পক্ষে বহিঃবিভাগ ও ওয়ার্ড রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে ৫০ শয্যা বিশষ্ট শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনসালটেন্ট, মেডিসিন, সার্জারী, গাইনি, শিশু বিশেষজ্ঞসহ ১৯ জন চিকিৎসকের পদ শুন্য থাকলেও কর্মরত রয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কাগজে কলমে ৭ জন। কিন্তু বাস্তবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৫ জন। এদের মধ্যে ডা. কেয়ামনি মাতৃত্ব জনিত ছুটিতে রয়েছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি ২জন মেডিকেল অফিসার উপর মহলের সাথে যোাগাযোগ করে বদলি হয়ে যাওয়ায় সংকট আরও বেশি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ প্রিয় গোপাল বিশ^াস বলেন, ডা. নাদিয়া নওরিন শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত দেখিয়ে বেতন ভাতা তুললেও গত প্রায় তিন বছর ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীতে এটাসমেন্টে কর্মরত রয়েছেন এছাড়া একই ভাবে ডা. তাহসিনা হক প্রমি শরণখোলায় কর্মরত দেখিয়ে প্রায় আড়াই বছর ধরে প্রেশনে খুলনা মেডিকেল কলেজে কর্মরত রয়েছেন। গত ৫ আগষ্ট ডা. তাহসিনা হক প্রমিকে শরণখোলায় যোগদান করার নির্দেশ প্রদান করলেও তিনি অধ্যবদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কোনো যোগাযোগ করেননি। তবে অন্য একটি তথ্য সূত্রে জানা গেছে ডা. তাহসিনা হক প্রমি বিশেষ ক্ষমতা বলে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংএ কুমিল্লা বার্ডে অবস্থান করছেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসফাক হোসেন বলেন, ডা. সংকটের কারনে বহিরাগত ও ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবিা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনকি শারিরীক ভাবে মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি আরও জানান ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া সংকট থাকায় হাসপাতালের ভিতরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
এ ব্যাপারে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন বলেন, ডা. নাদিয়া নওরিনকে ডিজিতে সংযুক্ত করার বিষয়টি উর্ধ্বতন মহল প্রয়োজনবোধে কয়েছেন। অন্য সমস্যাগুলি তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুলনা ও ঢাকাকে অবহিত করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ মনজুর মোর্শেদ বলেন, ডাক্তার সংকটের কারনে নতুন করে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সমস্যা দূরিকরণসহ নতুন করে ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে।