কুষ্টিয়ায় ৪ সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ, ভাঙচুর, আগুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে কুষ্টিয়ায় সকাল থেকে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন শহস্রাধীক বিক্ষোভকারী। এ সময় আওয়ামী লীগের অফিস, ট্রাফিক বক্স ও বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। সে সময় সংবাদ সংগ্রহকালে চার সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন।

গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকরা হলেন- চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার শরীফ বিশ্বাস, একাত্তর টিভির শাহীন আলী ও তাদের দুই ক্যামেরাপারসন।

রোববার (৪ আগস্ট) ১১টার দিকে শহরের এন. এস রোডে এ ঘটনা ঘটে। এদিন সকালে শহরের সাদ্দাম বাজারে জমায়েত হতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে চৌড়হাস মোড়ে যান তারা। ফেরার পথে ফুলতলায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে কয়েকজন বিক্ষোভকারী।

সেখান থেকে মজমপুর গেটে যাওয়ার পথে সাদ্দাম বাজার মোড়ে আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। মজমপুর গেটে শহরের সবচেয়ে বড় ট্রাফিক বক্সটিও ভাঙচুর করা হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেন শহরের এন.এস রোডে। সেখানে কুষ্টিয়ার মডেল থানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় একদফা দাবির অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এর আগে

আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া ট্রাফিক অফিস ভাঙচুর করেন এবং সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের ধাওয়া, রাবার বুলেট, ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেন।

আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি বিক্ষোভে অভিভাবক, সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও যোগ দিতে দেখা গেছে। এ সময় মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে কুষ্টিয়া শহর। ‘আমার ভাই কবরে, বিচার চাই বিচার চাই’; ‘ভুয়া ভুয়া, পুলিশ ভুয়া’; ‘খুনি খুনি, পুলিশ খুনি’; ‘সরকারের পদত্যাগ চাই, আমার ভাইদের হত্যার বিচার চাই’; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিবো রক্ত’; ‘সরকারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।

চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার শরীফ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ও আমার ক্যামেরাপারসনসহ কয়েকজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছি। ক্যামেরা পারসনের শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ছররা গুলি ঢুকে আছে। আমরা স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।