কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের বাস মালিক ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের জেরে কুষ্টিয়ার সঙ্গে খুলনা ও ফরিদপুর রুটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আপাতত দুটি রুটে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে কুষ্টিয়ার সঙ্গে সারা দেশের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ জানায়, কয়েকদিন ধরেই ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে ফরিদপুরের ট্রিপ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এর জেরে গত ৫ এপ্রিল মধ্যরাতে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে গড়াই পরিবহনের স্টাফদের মারধর করেন ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-খুলনাগামী গড়াই-রূপসা পরিবহন এবং কুষ্টিয়া থেকে ফরিদপুরগামী সব যাত্রীবাহী বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলু জানান, ঝিনাইদহ শ্রমিক ইউনিয়ন বেশি ট্রিপের দাবিতে আমাদের শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। তারা শ্রমিকদের মারধর ও বাস ভাংচুর করে। এরই প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, দুটি রুটে অনির্দিষ্টকালের এই বাস ধর্মঘটের কারণে বিশেষ করে রোজার মধ্যে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধের কারণে অনেকেই বাস কাউন্টারে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সকালে শহরের মজমপুর বাস ডিপো এবং শহরতলীর চৌড়হাস এলাকার বাস টার্মিনালে খুলনা ও ঝিনাইদহ রটে যাওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেকে যাত্রীকে। খুলনার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শেখ আসলাম হোসেন জানান, পরিবার নিয়ে খুলনায় যাওয়ার জন্য টিকিট কাউন্টারে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কুষ্টিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তার হোসেন জানান, ঝিনাইদহ মোটর শ্রমিক নেতারা বাসের নতুন ট্রিপ দাবি করছেন। তাদের এই দাবির কারণেই মূলত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সেখানকার নেতাদের সঙ্গে বসি। এসময় ঝিনাইদহ জেলার শ্রমিকরা কুষ্টিয়ার পরিবহন ষ্টাফদের মারধর করে এবং বাস ভাঙচুর করে। এরই প্রতিবাদে বাস শ্রমিক-মালিক গ্রুপ উভয় মিলে এই দুই রুটে বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, খুলনা থেকে কুষ্টিয়ায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে ফরিদপুর রুটেও বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বাসের স্টাফদের মারধরের ঘটনায় জড়িতদের আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।