রাবিতে শিক্ষার্থীর থালায় গরুর হাড়, ক্যান্টিনে তালা, মালিককে অপসারণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলে মুরগির মাংসের সঙ্গে গরুর মাংস মিশিয়ে পরিবেশনের অভিযোগে ক্যান্টিনের ফটকে তালা দিয়েছেন সনাতন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে তারা তালা দেন। এ ঘটনায় আগামী দুইদিনের ক্যান্টিন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে হল ক্যান্টিনে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বাপ্পি চন্দ্র দাস খাওয়ার সময় থালায় বড় সাইজের একটা হাড় পান। হাড়টি গরুর কিনা সন্দেহ হলে তিনি তার এক বন্ধুকে দেখান। হাড়টি দেখে তারও সন্দেহ হয়। পরে একইরকম আরও একটি হাড় পান তিনি। পরে বিষয়টি তিনি ক্যান্টিন মালিক আলতাফ হোসেনকে জানান। এসময় মুরগির সঙ্গে গরুর মাংস মেশানোর অভিযোগ ক্যান্টিন মালিক অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে সনাতন একাধিক সনাতন শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হন এবং ক্যান্টিনে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ৩টার দিকে তারা হল ফটকেও তালা লাগিয়ে দেন। তবে এর কিছুক্ষণ পরেই হলের আবাসিক শিক্ষক গৌতম দত্ত উপস্থিত হলে তালা খুলে দেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাপ্পি চন্দ্র দাস বলেন, ‘খাবারের বিভিন্ন আইটেম থেকে আমি মুরগি বেছে নেই। খাওয়ার এক পর্যায়ে একটি হাড় পাই। এতে আমার সন্দেহ হয় এতো শক্ত হাড় তো আর মুরগির হতে পারে না। পরে পাশে থাকা এক মুসলিম শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলে তিনিও সন্দেহ করেন। তারপরও কিছু না বলে খাওয়া চালিয়ে যাই। তারপর আমি আবার আর একটি হাড় পাই। পাশে থাকা ওই শিক্ষার্থীকে দেখানোর সাথে সাথে তিনি বলেন এটি গরুর হাড়। এটি কোনো ভুল নয়। রীতিমত অপরাধ। আমরা তার অপসারণ ও শাস্তি চাই। এদিকে সাড়ে তিনটার দিকে হলে আসেন প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম। প্রাধ্যক্ষ তার কক্ষে সনাতন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানে অভিযুক্ত ক্যান্টিন মালিককেও ডাকা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ক্যান্টিন আগামী দুইদিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে ক্যানটিন মালিক আলতাফ হোসেন বলেন, গতরাতের রান্না করা গরুর মাংসের কিছুটা রয়ে গিয়েছিল। আজ সেইটুকু ভুল করে আমাদের এক নতুন কর্মচারী একসাথে মিশিয়ে দিয়েছে। আমরা এজন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। হল প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মৌখিক অভিযোগ ও বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যানটিন বন্ধ ঘোষণা করেছি। শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ক্যান্টিন মালিক বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। আর বিষয়টি ইচ্ছাকৃত কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হেব।’