রাবিতে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল

সম্পূর্ণরুপে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মশাল মিছিল পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে মশাল মিছিল নিয়ে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হোন। এসময় মশাল মিছিলে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, ছাত্র গণমঞ্চ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও পাহাড়ি ছাত্র সংসদসহ বেশ কয়েকটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী অংশ নেয়। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী রাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আলিফের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা শিক্ষার্থীদের মাঝে অসমতা সৃষ্টি করবে তাই আমরা এ দুটি কোটা সম্পূর্ণ রুপে বাতিল চাই। কোটা ব্যবস্থা শুধু তাদের জন্যই প্রয়োজন যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কিন্তু পোষ্য কোটা তেল মাথায় তেল দেওয়ার মতো। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যক্তির সন্তানকে সুযোগ দেওয়া। এ দুটি কোটা বাদে নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ও সংখ্যালুঘু জাতির জন্য কোটা বহালের দাবি জানাচ্ছি। রাবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক মেহেদী মারুফ বলেন, সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা ছাত্র অধিকার পরিষদ এখানে এসেছি। আমরা চাই বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নাতি-পুতি কোটা আমরা সম্পূর্ণ রুপে বাতিল চাই। বাংলাদেশের রেলওয়ে ও প্রাইমারি স্কুলে যে কোটা রয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে আমি মনে করছি। অতিদ্রুত এসব কোটা বাতিল করতে হবে। অন্যথায় আমরা আমাদের আন্দোলনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবো। নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, যে সরকারই আসে, তারাই শিক্ষার্থীদের ওপর স্টিমার চালাতে চায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুলিয়ে ভালিয়ে একটা কথিত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বানানোর চেষ্টা করছে। আমাদের দেশের যে বর্তমান অবস্থা সকল জায়গায় দুর্নীতিতে ভরপুর। কতটা নির্লজ্জ সিস্টেমের মধ্যে আমরা বসবাস করছি, যেখানে কোনো কর্মসংস্থান নাই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই, ভোটাধিকার নাই, পিএসসির মতো জায়গা থেকে প্রশ্নফাস করা হচ্ছে। সবাই মিলে দেশটাকে ধ্বংস করতে মেতে উঠছে। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ভারত আমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে করিডর ব্যবহার করছে। যেখানে ১৮ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে চাকরি করছে, সেখানে আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকরা কোথায় যাবে। কিভাবে চাকরি পাবে তারা? আমাদের দেশের তরুণরা সরকারি চাকরি পায়না সেখানে ভারতীয়রা ভালো বেতনে চাকরি করছে। উন্নয়নের নামে যা কিছু করা সম্ভব, সরকার তাই করে চলছে। আমরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিল চাই। এছাড়া নারীদের সমতা সৃষ্টির জন্য এবং সবক্ষেত্রে অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে তাদের জন্য কোটা প্রয়োজন রয়েছে। এসময় প্রায় সাত সংগঠনের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।