রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ও আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় জড়িত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীর অ্যাকাডেমিক এবং নৈতিক শৃঙ্খলার তত্ত্বাবধান ও রক্ষার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আবাসিক হলে সিট বাণিজ্য, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। কেউ যদি এখনো যুক্ত থাকেন, তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই মামলা রুজু করা হবে। যে সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত, তাদের ছুটি মঞ্জুর না করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক, সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৭২ জন শিক্ষার্থী অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে যে সব শিক্ষার্থী ছাত্রত্ব শেষ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে। আর যাদের ছাত্রত্ব আছে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এরপর সারা দেশে আন্দোলন বেগমান হয়ে ওঠে। পরে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠে।