বশেফমুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলা

জামালপুরের মেলান্দহে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে জামালপুর পৌরসভার বনপারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রথম দফায় নিরিবিলি মেসের সামনে তাদের ওপর হামলা চালানোর পর দ্বিতীয় দফায় ফের বনপারা কবরস্থানের সামনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বখাটেরা।

আহতরা শিক্ষার্থীরা হলেন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল নোমান, মনির হোসেন, ফায়জুর রহমান ফাহিম, রিয়াদ, জোবায়েদ, গুলজার, আব্দুল কাদের জিলানী, ইউনুস আলী। তারা সবাই একই বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।

এদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মনির আহমেদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ৪ জন বাসায় ফিরেছেন।

জানা গেছে, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্র চা পান করতে বের হলে কয়েকজন বখাটে তাদের পথরোধ করে গালিগালাজ করেন এবং এক ছাত্রের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এ সময় বাকিরা বাধা দিলে তাদের আক্রমণ করা হয়। আরও কয়েকজন স্থানীয় যুবক এসে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। পরে রাত ১০টার দিকে ওই যুবকদের কাছে থেকে ফোন ফিরিয়ে নিতে গেলে বখাটেরা সংঘবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর ছুরি, কাঁচি, লাঠি ও ইট দিয়ে হামলা চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট ছাত্র আহত হন।

আহত শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, ‘প্রতিদিনের ন্যায় মেসের সামনে কয়েকজন মিলে রাতে চা খেতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু পূর্ব থেকেই কিছু বখাটেরা আমাদের পথ আটকে ধরে বকাঝকা ও ধাক্কানো শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার ফোন কেড়ে নেয়। তখন মেসের মালিকও নিচে চলে আসে। মালিকের সঙ্গেও বখাটেদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। আমরা মেসের গেটের কাছাকাছি চলে গেলে সেখানে থেকে সমাজকর্মের দ্বিতীয় ব্যাচের সামিউল ভাইকে টেনে বাইরে নিয়ে নিয়ে মারতে শুরু করে। এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে আমাদের এখানে আসে। ততক্ষণে বখাটেরা চলে যায়। পরে রাত ১০টার দিকে আমরা শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ফিরিয়ে আনতে গেলে তারা অতর্কিতভাবে ছুরি, লাঠি ও দেশিয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ইউসুফ আলী বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীদের আমরা আগে চিকিৎসা দিয়েছি। এ ঘটনায় হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। দুপুরের মধ্যেই আমরা শনাক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করব।’

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত কবীর বলেন, ‘এই ঘটনার পরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এখন আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’-আমাদের সময়