জাবির এক সমন্বয়ককে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে তার বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার  (২৮ জুলাই) ভোর চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকার মনসুরনগর হাউজিং এস্টেটের বাসা থেকে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে  আরিফ সোহেলের বাবা আবুল খায়ের জানান, আনুমানিক চারটার দিকে ৮-১০ জনের একদল লোক আমাদের বাসার দোতালায় ঢুকেই সবার ফোন নিয়ে নেয়। পরে আরিফ সোহেল ও আমার বড় ছেলে মোহাম্মদ আলী জুয়েলকে কালো গ্লাসের মাইক্রোবাসে তোলে। এসময় আমরা আইডি কার্ড দেখতে চাইলে তারা আইডি কার্ড দেখায়। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। আইডি কার্ড ও তাদের আচরণ-কথাবার্তায় নিশ্চিত হই তারা ডিবি বা সিআইডির লোক।’

এদিকে তাকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম।

আবুল খায়ের আরও জানান, আমার দুই ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করতে বলে। ভোরে আশুলিয়া থানায় গেলে আমাকে থানায় ঢুকতেই দেয়নি। থানা থেকে জানায়, আশুলিয়া থানা থেকে এমন কোন অপারেশন পরিচালিত হয়নি। পরে আমি সাভার থানায় যাই। সেখানেও আমাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আমাকে অফিস আওয়ারে আসতে বলা হয়। পরে আমি সাভার সিটি সেন্টারের পেছনে ডিবি কার্যালয়ে যাই। তাদের অফিসটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাই। আমি যখন থানায় খোঁজ নিচ্ছিলাম, ইতোমধ্যে আমার বড় ছেলে মোহাম্মদ আলী জুয়েলকে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে ১০০ টাকা দিয়ে রিকশায় তুলে দেয় তারা। জুয়েল বাড়ি চলে আসে। ধারণা করছি আরিফ সোহেলকে ঢাকায় ডিবি বা সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে

ছেলের সন্ধান দাবি করে বাবা আবুল খায়ের দাবি করেন, আমার ছেলে তো অন্যায় কিছু করেনি। ছাত্রদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে কথা বলেছে। আর জাহাঙ্গীরনগরে রাষ্ট্রীয় সম্পদের তেমন ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। আমি আমার ছেলের সন্ধান ও নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

আরিফ সোহেলের ছোটবোন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে খায়ের ঈদি জানান, ভোররাতে তুলে নেয়ার ঘটনায় তার সন্ধান দাবি করে তারা ইতোমধ্যে এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রের দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন।

 এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, `আমরা জাবি শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানিনা। আশুলিয়া থানায় এমন কাউকে নিয়ে আসা হয়নি।’