কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দেয়ালচিত্রে নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি

সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষার্থীদের রং-তুলির আঁচড়ে সেজেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দেয়াল।  বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গণমানুষের কাঙ্খিত বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের চিত্র ও নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। ‘বাংলাদেশ ২.০’ নামের সমসাময়িক বিষয়ের উপর আঁকা এ দেয়াল চিত্র  প্রশংসা কুড়িয়েছে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের ।

গত ০৫ আগষ্ট এই দেয়াল চিত্রটি অঙ্কনের উদ্যোগ গ্ৰহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে তাদের সাথে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয় । চিত্রটি ডিজাইন ও অঙ্কন করেছেন মোবাশ্বির রহমান মনির (চারুকলা ১৩), মোখলেছুর রহমান শুভ (চারুকলা ১৬), রিদয় হাসান (চারুকলা ১৬) ‌। এছাড়াও যে সকল শিক্ষার্থীরা অঙ্কন করেছেন – দিনেষ চন্দ্র, হাবিব আহমেদ, খোকন পাল, রিদয় হাসান ,তাসবিহ ইসলাম, তারিন জাহান সৌরভী, তৌহিদ দিদার, অরিন সাহা, অর্পিতা কর্মকার পায়েল, আশরাফুল ইসলাম রাজু, রতন মহন বিশ্বাস,অভি রায়, অলিন চাকমা এবং চারুকলা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের আরো অনেকেই।

শিক্ষার্থীরা এ চিত্রটিকে সমসাময়িক বাংলাদেশের ঘটনাবলির আলোকে অঙ্কিত সবচেয়ে বড় দেয়াল চিত্র হিসেবে দাবি করেছেন । এটির উচ্চতা ১৬ ফিট এবং প্রশস্ততা ১৪ ফিট । পাহাড় থেকে সমতল অর্থাৎ পুরো বাংলাদেশ যে একটি পরিবার এবং এদেশটা যে সবার তা এই চিত্রটির মূল প্রতিপাদ্য  । ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে  ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ,  ২৪’র গণঅভ্যুত্থান সবকিছুই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এতে । ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত নতুন শাসন,  নতুন বিচার কাঠামো এবং আবুল সাইদ, মুগ্ধ , সাকিব, ফয়সাল, ইমন, মারুফ সহ অগণিত  শহীদদের স্মৃতি অমর করে রাখার হয়েছে এর মাধ্যমে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোখলেছুর রহমান শুভ বলেন,  রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ । এই দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে আমরা অনাগত প্রজন্মের কাছে বার্তা পৌঁছাতে চাচ্ছি যে, যেখানেই বৈষম্য ও অনিয়ম চোখে পড়বে সেখানেই পাহাড়ের মত ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হবে । আন্দোলনে শহীদের আত্মত্যাগ ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতেই আমাদের এই আয়োজন।

চারুকলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী  মোবাশ্বির রহমান মনির বলেন, তরুণদের ডাকেই ছাত্র-জনতা এক কাতারে দাঁড়িয়েছিল। যে কারণে ৫ আগস্টের মতো একটি গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়েছিল। তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা রং-তুলির এই চিত্রগুলো অনাগত বাঙালি প্রজন্মের সঠিক পাথেয় হয়ে থাকবে। তাদের এই দেয়ালচিত্র নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্ৰামকে স্মরণীয় করে রাখবে।