এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ফেল করেছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য বিষয়ে পাসের হার ৯০ শতাংশ হলেও ইংরেজিতে পাস করেছেন মাত্র ৬৮ শতাংশ। ইংরেজি বিষয়ে বেশি ফেল করায় সামগ্রিক ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। গত বছরও ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছিলেন। এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। গত বছর পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ ভাগ, জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৮ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফল থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৬ হাজার ২৪৭ জন এবং ছাত্রী ৪২ হাজার ৫১৭ জন। পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ১৩ জন।
২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭৬ হাজার ৬১৬ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৫ হাজার ৮৮৫ জন এবং ছাত্রী ৪০ হাজার ৭৩১ জন। পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮। জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৮ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী। বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ২৭ জন।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় যশোর বোর্ডর ফলাফল খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজি পরীক্ষায় ৩১ শতাংশ অনুত্তীর্ণ হওয়ায় সার্বিক ফলাফলের ওপর এর প্রভাব পড়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাইমারি ও হাইস্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে সাধারণত অত বেশি উন্নতি করতে পারে না। কলেজ পর্যায়ে এসে ইংরেজিতে ভালো করে শেখে। এবার শিক্ষার্থীরা সময় পেয়েছেন মাত্র ১৬ মাস। এই অল্প সময়ে ১৩টি বিষয়ে পড়ালেখা এবং শেখা খুবই দুরূহ কাজ। তা ছাড়া এবারের শিক্ষার্থীরা ২০১৯ সালে জেএসসি পাস করেন। ২০২০ সালে মহামারি করোনার কারণে তারা সশরীরে প্রায় দেড় বছর ক্লাস করতে পারেনি। কিছু ক্লাস করেছেন অনলাইনে। গত বছরও ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছিলেন। এবার অন্যান্য বিষয়ে পাসের হার ৯০ শতাংশ হলেও ইংরেজিতে পাস করেছে মাত্র ৬৮ শতাংশ। ইংরেজিতে খারাপ ফলাফল সামগ্রিক ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, এবার শিক্ষার্থীরা সাতটি বিষয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা সেগুলো মূল্যায়নের পাশাপাশি বাকি ছয়টি বিষয়ের মূল্যায়ন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ম্যাপিং করে দিয়েছি।’
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফল নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর। এবারের ফলাফল তুলনামূলকভাবে খারাপ। ভালো ফলাফলের জন্যে এই তিন পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বলবো, আপনারা আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুন। আপনাদেরই বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা খারাপ করছে, সেই শিক্ষকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন করার পরামর্শের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হবে। ছেলেমেয়েদের পড়ার প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হওয়া প্রয়োজন।’