রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৫ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও কথিত শান্তি সমাবেশের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে মুচলেকা দিয়ে পার পেয়েছেন ৬ জন শিক্ষার্থী।
শাস্তি পাওয়া সবাই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ২৭তম বিডিএস ব্যাচের শিক্ষার্থী জাকির হাসান অমির আড়াই বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রামেকের ২৯তম এমবিবিএস ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রহমান সিয়ামকে ছয় মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কারের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ৩০তম ব্যাচের আশিক রেজার এক বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ব্যাচের রাফিউর রহমান সিয়ামের ইন্টার্নশিপ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকেও ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া সাদমান সাকিব রক্তিমের ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে শুভ কুমার মণ্ডলের দুই বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার, জয়দেব কুমার সাহার দুই বছরের জন্য তার বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত, গৌরব কুমার সাহার বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন স্থগিত, আসিফুজ্জামনের এক বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার ও আব্দুল্লাহ আল মামুন বর্ষণের ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে নাহিদ হাসানের দুই বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার, রাইদা রশিদ ত্বাহার দুই বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার, মাহদিন আহমেদ খানের এক বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত, মিজানুর রহমানের এক বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত, মুক্তার আলীর ছয় মাস ইন্টার্নশিপ স্থগিত এবং তাদের সবাইকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ২৯তম ব্যাচের সাবিহা আফরিন ছন্দকে তিরস্কার করা হয়েছে। তবে অভিভাবকের উপস্থিতিতে মুচলেকা দিয়ে পার পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও ফরিদ উদ্দিন, মুস্তাফিজ আল আমিন, শরিফ হোসেন, সাব্বির হোসেন অভি ও শাহরিয়ার আহসান সাজিদকেও মুচলেকা নিয়ে মাফ করা হয়েছে।
ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, ‘মূলত শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্ত করে একটি কমিটি। তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্য, র্যাগিং, শিক্ষার্থী নির্যাতন ও জুলাইয়ের ছাত্র অভ্যুত্থানের বিরোধিতার অভিযোগের সত্যতা পায়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হলো।’