রাজশাহীতে অবৈধ অটোরিকশা বাণিজ্য, বেড়েছে ভোগান্তি

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা। রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। সেখানে দুই রাস্তায় অন্তত দেড় হাজার যানবাহন, যার বেশির ভাগই তিন চাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ট্রাফিক পুলিশের অনেক সময়ের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে যানজট।ততক্ষণে যাত্রীসহ পথচারীদের বিরক্তি চরমে পৌঁছে। এমন দৃশ্য নগরীতে সব জায়গায় প্রায় প্রতিদিনের।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর সড়কগুলো দাপিয়ে বেড়ায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার অটোরিকশা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ৯ হাজারের।

অথচ প্রতিটি অটোরিকশার নাম্বার প্লেটেই রাসিকের নম্বর দেওয়া রয়েছে। অটোরিকশা চালকদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের একটি চক্র একেকটি লাইসেন্স দুই-তিনবার করে বিক্রি করেছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে।এই চক্রের হোতা ছিলেন অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগ নেতা সাগর হোসেন। সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের আস্থাভাজন সাগর নগরীতে অটোরিকশার লাইসেন্স বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

রাসিকের একটি সূত্র জানায়, ব্যাটারিচালিত দুই শ্রেণির অটোরিকশা চলে নগরীতে। এর মধ্যে আটজন যাত্রী বহন ক্ষমতার অটোরিকশা রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। এ ছাড়া দুজন যাত্রী বহনের ছোট অটোরিকশা রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। সব মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার অটোরিকশা চলাচল করছে মাত্র ৯৬ বর্গকিলোমিটারের এই নগরীতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালে অনলাইনে আবেদন জমা নিয়ে আট হাজার ৯০০টি অটোরিকশার নিবন্ধন দেয় রাসিক। এরপর আর নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। ফলে বর্তমানে নগরীতে চলাচল করা বেশির ভাগ অটোরিকশাই অবৈধ।

ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রফিকুল আলম বলেন, ‘অটোরিকশার চালকরা অনেকটাই বেপরোয়া। এদের নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন। ফলে দুর্ঘটনাও ঘটে প্রচুর। আবার যানজট তো লেগেই থাকছে এই অটোরিকশার কারণে। আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে বৈঠক করছি এ সমস্যা সমাধানের। কিন্তু তেমন কোনো অগ্রগতি দেখছি না অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে।’

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূরে সাইদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশেনের পক্ষ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও পরে সেই সিদ্ধান্ত শিথিল করা হয়। সেই সুযোগে নগরীতে হাজার হাজার অটোরিকশা নেমেছে, যেগুলোর বেশির ভাগেরই নিবন্ধন নেই। তিন-চারটি অটোরিকশা চলছে একই নম্বরে।’