রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : নুরুল হক নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এখনো স্বস্তির সুযোগ নেই। ফ্যাসিবাদীরা মাথাচারা দিতে চায়; তারা বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তা মিছিল করছে।’ শুক্রবার বিকেলে লালবাগ আয়োজিত ‘ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবে আহতদের সুস্থতা কামনা ও শহীদের স্মরণে দোয়া এবং বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। ৫ আগস্টের পূর্বে দলমত নির্বিশেষে মানুষের মাঝে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিলো তাতে ফাটল ধরেছে উল্লেখ করে ভিপি নুর বলেন, ‘অভ্যুত্থানের শক্তিসমূহ এখন বিভক্ত।

গণঅভ্যুত্থানকারী শক্তিসমূহের বিভাজন ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তাই রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যার বিচারে অভ্যুত্থানকারী শক্তিসমূহকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি নিজেদের চিন্তা, সমাজ ও রাজনীতির সংস্কারও জরুরি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাকেন্দ্রিক যে দানবীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেন ক্ষমতায় গিয়ে দানব হয়ে উঠতে না পারে তার সেজন্য আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সংসদের মেয়াদ ৪ বছর করার কথা বলছি। দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক ব্যবস্থতার পরিবর্তনে তরুণদের রাজনীতিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, ‘খেটে খাওয়া মানুষরা রাষ্ট্র সংস্কার বোঝে না, তারা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চায়। পাঁচ থেকে সাড়ে ৫ কোটি নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা ভাবতে হবে।

এরাই গণআন্দোলনে অগ্রভাগে থাকে, জীবন দেয়। তাদের কথা মাথায় রাখতে হবে, বাজারে স্বস্তি ফেরাতে হবে। রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব না রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, তাদেরকেও সঠিক পথে থাকতে হবে। আমাদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কোনোভাবেই নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে গণঅভ্যুত্থান বেহাত হতে দেওয়া যাবে না।

৭১ এর পরে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় ৫৩ বছরে দেশে কোনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ২৪ সালেও একই ভুল করলে জাতি হিসেবে আমরা আর কখনো দাঁড়াতে পারবো না।’ আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদের লালবাগ থানা শাখার সভাপতি ইউনূস আলী। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, কেন্দ্রীয় নেতা আলাউদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ। সূত্র: কালের কণ্ঠ