ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও প্রশাসনে রয়েছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রের পক্ষের যারা আছেন, তাদেরকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হচ্ছে না। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও প্রশাসনে বসে আছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্বৈরশাসকের ইঁদুররা বসে রয়েছে, তারা মাঝে মাঝে ঐরাবত তথা হাতি হওয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন একটি ফ্যাসিবাদ শাসককে জনগণ যখন বিপ্লবের মাঝে নামিয়ে দেয়, সে বিপ্লবের মাঝে প্রতিবিপ্লবের আশঙ্কা থাকে। স্বৈরশাসকের ইঁদুররা সচিবালয় বলুন, প্রশাসন বলুন, সেখানে তারা ঘাপটি মেরে আছে। সুযোগ পেলেই তারা ছোবল মারে।

আজ সোমবার এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) -এর ত্রাণ কার্যক্রম উদ্ভোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বন্যাদুর্গত এলাকায় সার্বিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)। সহায়তা কার্যক্রমের এই মহাযজ্ঞ উদ্বোধন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এ সময় তিনি আরও বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মতো একটি বাহিনী আছে, তা হলো আনসার বাহিনী। তারা বিভিন্ন এসোসিয়েসন এবং সিবিএর মতো আন্দোলন করছে অবস্থান নিচ্ছে, দাবি মেনে নেওয়ার পরও তারা অবস্থান করছে এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থির করার জন্য, দেশকে অস্থির করার জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তা করা হচ্ছে বলে দেশবাসী মনে করে। দেশে আজকে একটি পরিবর্তিত অবস্থা হয়েছে। যে সচিবরা স্বৈরশাসকের দোসর হিসেবে কাজ করেছে সে সচিবরা তো এখনও বহাল রয়েছে। তারা তো আওয়ামী লীগের দোসর, তারা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে বারবার ষড়যন্ত্র করবেই।

তিনি বলেন, দ্রুত মাঠ পর্যায়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষের শক্তিকে বিন্যাস করা দরকার, পরিবর্তন করা দরকার। এসপি, প্রশাসনের লোকেরা যারা নিপীড়ণ করেছে, তারা যদি ফিল্ডে থাকে তাহলেতো ষড়যন্ত্র হবেই। ফিল্ডে থেকে তারা বারবার অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে তদারকি করতে হবে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা লোকেরা কাজ করছে কিনা। এ বিষয়ে তাদের সতর্ক থাকতে হবে।

রিজভী আহমেদ বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে যারা আছেন তারাদরেকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হচ্ছে না। প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেক্টরে তাদের বসানো হচ্ছে না। দীর্ঘদিন যারা স্বৈরশাসকের হাতে বঞ্চিত অথচ মেধাবী সে সব কর্মকর্তাদের, প্রকৌশলী ও চিকিৎসকদের এখনও মূল জায়গায় বসানো হচ্ছে না। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এবং বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী থেকে সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এখনও তারা বহাল রয়েছে। অবিলম্বে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিকে প্রশাসনসহ সকল অফিস-আদালতে বসানোর দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন আনসাররা আবারও কোমলমতি ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করেছে, বুট দিয়ে তাদের পিসে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, গুলি করেছে। এখনও গোপন ষড়যন্ত্র করছে তারা। তাদের হাতে প্রচুর টাকা, অস্ত্রও আছে প্রচুর। ক্যাসিনোর মালিকদেরকে অস্ত্র দিয়েছিল স্বৈরশাসকরা। তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। এ অস্ত্র এখন তারা ব্যবহার করবে। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আন্দোলনের পক্ষে শক্তিকে বসাতে হবে।

রিজভী বলেন, আমাদের ওপর দীর্ঘ ১৬ বছর ভয়াবহ নির্যাতন চলেছে। আমাদের যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন যারা চাকরি করেছেন তারা নানাভাবে নাজেহাল হয়েছেন, তাদেরকে প্রমোশন দেওয়া হয়নি। শত নিপীড়ন সহ্য করেও তারা জাতীয়তাবাদী পতাকাকে হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, ইঞ্জনিয়ার্স এসোসিয়েশনের আমাদের অনেক প্রোগাম করতে দেয়নি। আমাদের যারা প্রকৌশলীরা রয়েছেন তারা আমাদের নানাভাবে সহায়তা করেছেন। এখানেও নির্ধারত অনেক কর্মসূচি পুলিশ বন্ডুল করে দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রোগ্রাম পর্যন্ত করতে দেয়নি।

তিনি এ্যাবের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, অসহায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন এ্যাব। তারা বন্যাদুর্গতদের মাঝে পানি, প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার, ঘরবাড়ি নির্মাণের ব্যবস্থা করেছে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং এ্যাব সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএনপির সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং এ্যাব সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, এ্যাবের ১ নম্বর যুগ্ম মহাসচিব কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নু, সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তানভীরুল আহসান, ইঞ্জিনিয়ার বি জে বড়ুয়া, ঢাকা বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, ইঞ্জিনিয়ার আহসান রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শাহীন হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার দপ্তর সম্পাদক সাব্বির ওসমানী, ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান সোহাগসহ নেতৃবৃন্দ।