চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছে সরকার : ফখরুল

আওয়ামী লীগ সারাক্ষণ বিএনপিকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) লালবাগে এক ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বঙ্গবাজার পুড়ে গেছে, এই বাজার বড় লোকের বাজার নয়, সাধারণ মধ্যবিত্তদের বাজার। দুর্ভাগ্য আমাদের এর আগে সিদ্দিক বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন মানুষ মারা গেল। এর আগে চট্টগ্রামে হয়েছে। কিন্তু এই সরকারের এসব ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সারাক্ষণ একটা দুঃস্বপ্ন দেখে। এই বুঝি বিএনপি আসলো, এই বুঝি আন্দোলন করলো, এই বুঝি তারেক রহমান আসলো। রাতে মানুষ খারাপ স্বপ্ন দেখলে যেমন আঁতকে ওঠে, চিৎকার করে তেমনি আওয়ামী লীগও সারাক্ষণ দুঃস্বপ্ন দেখে এই বুঝি বিএনপি আসলো।’ ‘আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সমস্ত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভোট দিতে পারছেন না আপনারা। ভোট আগের রাতে হয়ে গেছে আর ওরা (আওয়ামী লীগ) সরকারে বসে গেছে। ২০১৪ সালে ভোটই হয়নি অথচ ১৫৩টি আসনে নির্বাচিত ঘোষণা হয়ে গেল। আর প্রত্যেক কথায় কথায় তারা খালি বলে উন্নয়ন করেছে। আমি এখানে আসার পথে দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা- উন্নয়ন কি চুবাইয়ে খাব? উন্নয়ন তো চিবিয়ে খাওয়া যায় না। আমার পেটে যদি ভাত না থাকে, ১০টা উড়াল সেতু বানান আমার তাতে কি আসে যায়?’ পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যাপক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছে। আমার কথা খুব সোজা, ১৪ বছর বহু জ্বালিয়েছেন এদেশের মানুষকে। এখন আপনাদের মানুষ দেখতে চায় না, আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। সোজাসুজি বলতে চাই, এই রমজানের মাসে এই ইফতারের আগে, দয়া করে মানে মানে সরে পড়ুন। আমাদের সব কিছুকে আপনারা ধ্বংস করে দিয়েছেন। আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন, আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন, চুরি-দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করেছেন। দয়া করে সরে পড়েন, একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। মানুষ একটা ভোট দিক, ভোট দিয়ে মানুষ যাকে খুশি তাকে নির্বাচিত করুক।’ ফখরুল বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনেক দুঃখের সঙ্গে বলেছেন, ইভিএম-ব্যালট কোনোটাই কাজে দেবে না যদি বিরোধী দল অংশ না নেয়, অর্থাৎ বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় সেটা কাজে দেবে না। কেউ মানবে না। সুতরাং একটাই দাবি যে, পদত্যাগ করুন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’ লালবাগের সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘লালবাগের মানুষ ঢাকার সবচেয়ে পুরনো মানুষ। আপনাদের এই এলাকায় অনেক নামকরা নেতা ছিলেন। সবশেষে আমাদের নাসিরউদ্দিন পিন্টু ভাই আমাদের একজন ত্যাগী, সাহসী, বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। এই সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে, জেলখানার মধ্যে হত্যা করেছে, কাস্টডিওতে হত্যা করেছে। এরকম কাস্টডিওতে বহু লোককে হত্যা করেছে, এই এলাকায় মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করে নিয়ে গেছে।’ লালবাগে ‘হৃদয় কমিউনিটি সেন্টারে’ থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে লালবাগ থানার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন। মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে এই ইফতারে মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদসহ ওয়ার্ড নেতারা বক্তব্য দেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ