গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনকে আরও বেগবান করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিএনপিসহ সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের নেতারা।
রোববার রাজধানীতে পৃথক ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিরোধী নেতারা এ আহ্বান জানান। রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকদের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে গণ ফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।
এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরা এখানে অনেকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, অনান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও আহ্বান জানাতে চাই। আসুন দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা ও তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি।’
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাই আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। দেশকে মহা দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করি।’
জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘এই জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে বাঁচতে হলে রুখে দাঁড়াতে হবে। এদেরকে বিদায় করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে, মানুষের বিরুদ্ধে তাই এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশে ভয়াবহ অরজগতা চলছে, মানুষে মানুষের মধ্যে বিভেদ ছাড়া এই সরকার কিছুই করতে পারেনি।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকার অর্ধেক আছে, বাকি অর্ধেক আন্দোলন গড়ে তুলে বিদায় করতে হবে।’
গণ ফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টুর সভাপতিত্বে এতে আরও অংশ নেন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান, জাগপার সভাপতি লুৎফুর রহমান, এবি পার্টির আহ্বায়ক এস এম সোলাইমান চৌধুরী, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়াটার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, গণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
অপরদিকে রাজধানীর দারুস সালামে এসএ খালেকের বাসভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর দারুসসালাম থানা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভোট চুরির মাধ্যমে এবার ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। কোনো সুযেগ নেই। ভোট চোরদের তালিকা করা হচ্ছে, ভোট চোরদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এবার ভোট চোরদের বিরুদ্ধে দেশের ভিতরে বাহিরে স্যাংশন আসবে। পালিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘রাজপথে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করে আওয়ামী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।’
আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আন্দোলনের ডাক আসবে, আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। আন্দোলনের ডাক আসা মাত্র সকলকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
দারুস সালাম থানা বিএনপির আহবায়ক এস এ সিদ্দিক সাজুর সভাপতিত্বে আরও অংশ নেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ সোহরাব, মহিলা দলের সুলতানা আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, সদস্য এবিএমএ রাজ্জাক ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি গাজী রেজওয়ানুল হোসন রিয়াজ।
এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কদমতলী থানা বিএনপির দোয়া ও ইফতার পূর্ব এক আলোচনা সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে দেশের জনগন আজ ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো সময় জনতার রুদ্র তোপে পতিত হয়ে এ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবে।’
মহানগর সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু সরকারকে সর্তক করে বলেন, ‘হত্যা, গুম, হামলা কিংবা মামলা দিয়ে বিএনপির অগ্রযাত্রা রুখতে পারবেন না। আমরা নিশ্চিত কামিয়াব হব।’
মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘তারেক রহমান যখনই চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিবেন এই অবৈধ সরকার বানের পানির মত ভেসে বঙ্গোপসাগরে পতিত হবে।’
এতে আরও অংশ নেন বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আ.ন.ম সাইফুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ রবিন, কদমতলী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি কমিশনার মীর হোসেন মীরু, কাউন্সিলর জুম্মন মিয়াসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।