ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ভীতু আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় তারা কাওয়ার্ড (কাপুরুষ) সরকার। এজন্যই তারা জনগণকে ভয় পায়; দাঁড়াতে দেয় না, কথা বলতে দেয় না। এই সরকার আজ দেশকে কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে?
শনিবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এ্যাবের মহাসচিব আলমগীর হাছিন আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. মোস্তাফা-ই-জামান সেলিম (সিআইপি), প্রকৌশলী আব্দুল সোবহান, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, সৈয়দ আবদাল আহমদ, আব্দুল হাই শিকদার, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্য সেলিম ভুঁইয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, শনিবার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের মূল্য প্রতিরোধ ও সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে সারাদেশে উপজেলা-থানা পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি ছিল। অধিকাংশ জায়গায় কর্মসূচি করতে দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যেই ঢাকায় ৫০ জনের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। যশোরের শার্শায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিতে হাতুড়ি দিয়ে হামলা চালিয়েছে। নেত্রকোনায় হামলা করেছে। এভাবে দেশের অন্যান্য জায়গায়ও হামলা হয়েছে।
তিনি প্রকৌশলী ও পেশাজীবীদের উদ্দেশে বলেন, সুতরাং আর বসে থাকার সুযোগ নেই। আমাদের ১৭ জনকে তারা খুন করেছে। হাজার হাজার লোককে তারা গ্রেপ্তার করেছে। আজকে কেউ ভালো নেই। জেগে উঠতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার ভাষণে বলেছেন গণতন্ত্রহীন উন্নয়ন কখনও সর্বজনীন হতে পারে না। অথচ এই কথা আমরা বহুকাল ধরে বলে আসছি। তার দল আওয়ামী লীগই তো এই গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশ ফোকলা করে দিয়েছে। আসুন আমরা একটি মুক্ত ও সতসত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা এমন একটা দেশে বাস করছি যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা নেই। দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নেই। দেশের মুসলমানরা ইফতারও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারেন না। আসলে দেশে গণতন্ত্র না থাকলে যা হয় তাই হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কেন গণতন্ত্র নেই, এই প্রশ্ন নতুন প্রজন্মকে করতে হবে।
তিনি বলেন, শহরে ফ্লাইওভার-এক্সপ্রেসওয়ে-মেট্রোরেল নির্মাণের নামে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করায় বিএনপি বিশ্বাস করে না, তারা সত্যিকার গণমানুষের উন্নয়নে বিশ্বাসী।
ইফতার মাহফিলে পেশাজীবীদের মধ্যে সাংবাদিক ইলিয়াস খান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. মো. মেহেদী হাসান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, মো. জাকির হোসেন, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, আমিরুল ইসলাম কাগজী, শাহজাহান সাজু, মাজহারুল পারভেজ,এ্যাব নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রকৌশলী মো. হানিফ, প্রকৌশলী রিয়াজ উদ্দিন ভুইয়া, প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব হোসেন মুকুল, আসিফ হোসেন রচিসহ এ্যাবের প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।