স্বাগত হেমন্ত

হালকা কুয়াশার আস্তর ছড়িয়ে পড়েছে ভোরের প্রকৃতিতে। আশ্বিন শেষ হয়ে আজ পয়লা কার্তিক। কার্তিক-অগ্রহায়ণ এই দুই মাস হেমন্ত। হেমন্তের প্রথমদিন আজ। ঋতু হেমন্ত শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হলো। হেমন্তকে স্বাগত।

হেমন্তকে বলা হয় গরম ও শীত এ দুয়ের মেলবন্ধন। হেমন্তের ভোরে দেখা মেলে হালকা কুয়াশা এবং শিশিরে ভিজে থাকে ঘাস। তারপর সূর্যের তীব্রতা যত বাড়ে, অনুভূত হয় গরম। হেমন্তের শেষে আস্তে আস্তে জানান দেয় শীত আসছে। এ সময় খেজুরের রস সংগ্রহে প্রস্তুতি নেন গাছিরাও।

হেমন্তের প্রকৃতি মিষ্টি সোনা রোদ মাখা। নীল আকাশ। প্রকৃতিও প্রগাঢ় সবুজ। গ্রীষ্মের মাটি ফাটানো দাবদাহ নেই, বর্ষার অঝোর ধারায় ভিজে যাওয়াও নেই।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপলব্ধিতে ঋতু হেমন্ত এ রকম- ‘আজি হেমন্তের শান্তি ব্যাপ্ত চরাচরে/ জনশূন্য ক্ষেত্র মাঝে দীপ্ত দ্বিপ্রহরে/ শব্দহীন গতিহীন স্তব্ধতা উদার/ রয়েছে পড়িয়া শ্রান্ত দিগন্ত প্রসার/ স্বর্ণশ্যাম ডানা মেলি।’

এক সময় হেমন্ত দিয়ে শুরু হতো বাংলা বছর। সম্রাট আকবর অগ্রহায়ণ মাসকেই বছরের প্রথম মাস বা খাজনা তোলার মাস ঘোষণা দিয়েছিলেন। যেহেতু, হেমন্ত ধান উৎপাদনের ঋতু। হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধানে পাক ধরে। কার্তিকের শেষ দিকে গ্রামের মাঠে মাঠে ধান কাটার ধুম পড়ে যায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পাকা ধানের ম ম গন্ধ।

জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় বাংলাদেশের ষড়ঋতুতে ঘটছে তারতম্য। অনেক ঋতুই তার বৈশিষ্ট ধরে রাখতে পারছে না। তারপরও কমেনি হেমন্তের আবেদন। হেমন্ত এখনো হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে আমাদের।