পাচারের অর্থ ফেরাতে গভর্নরকে প্রধান করে টাস্কফোর্স পুনর্গঠন

বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তসংস্থা টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করেছে সরকার। প্রথমবারের মতো এ টাস্কফোর্সের সভাপতি করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে। আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। গভর্নর ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, এটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, এনবিআরের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং বিএফআইইউ-এর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে টাস্কফোর্সের সদস্য করা হয়েছে। টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি প্রসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ বা সম্পদ চিহ্নিতকরণ ও তদন্তে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সহযোগিতা প্রদান; পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারে দায়েরকৃত মামলাসমূহের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা ও তা দূরীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ; বিদেশে পাচারকৃত সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার উদ্যোগ গ্রহণ; জব্দ বা উদ্ধারকৃত সম্পদের ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ; এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ, বিদেশী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, তথ্য আহরণ; এবং পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয় সাধন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী টাস্কফোর্সের কার্যাবলি সমন্বয় করবেন এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) টাস্কফোর্সকে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সরকারি-বেসরকারি কোনো সদস্য কৌ-অপ্ট করতে পারবে এবং কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধি বা বিশেষজ্ঞকে সভায় উপস্থিত হওয়াসহ বিশেষজ্ঞ মতামত/পরামর্শ প্রদানের অনুরোধ করতে পারবে। এর আগে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে প্রথম ১০ সদস্যের আন্তসংস্থা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। পরে ২০২২ সালের ৫ জুন এর সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ১৪। বরাবরই আহ্বায়ক করা হয় অ্যাটর্নি জেনারেলকে। আর সদস্যসচিব ছিলেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের উপপ্রধান কর্মকর্তা। পরে ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি আবার পুনর্গঠন করা হয় এ টাস্কফোর্স। ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকা।