ঢাকাসহ ১৩ জেলায় সহিংসতায় নিহত ৫৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকায় সাতজন মারা গেছেন। এছাড়া সিরাজগঞ্জে ১৭ জন, ফেনীতে সাতজন, রংপুরে চারজন, নরসিংদীতে ছয়জন, লক্ষ্মীপুরে চারজন, পাবনায় তিনজন, মুন্সীগঞ্জে দুইজন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে দুইজন, কুমিল্লায় দুইজন, মাগুরায় একজন, বরিশালে একজন ও জয়পুরহাটে একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঢামেকে ৫ জনের মরদেহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব মরদেহ আনা হয়।

নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২৩), ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রমিত উদ্দিন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী তোহিদুল ইসলাম। এছাড়া বাকি দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

উত্তরায় সংঘর্ষে আ.লীগ নেতা নিহত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর উত্তরায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. হাবিব হাসান।

ধামরাইয়ে অজ্ঞাত যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ

ঢাকার ধামরাইয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও আরও একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহটি ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।

এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৩ পুলিশ সদস্য নিহ

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইডি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রায়গঞ্জে সাংবাদিকসহ নিহত ৪

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় সাংবাদিকসহ চারজন নিহত হয়েছেন। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম তৌহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজনকে মৃত অবস্থায় এবং একজনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসলে এখানে তার মৃত্যু হয়।

ঝিগাতলায় গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত

রাজধানীর ঝিগাতলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।

রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল চারটার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২৩)। তিনি হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিবিএর ছাত্র। তিনি রায় শাহ বাজার সূত্রাপুর এলাকার আবু বক্করের ছেলে।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ড. আলাউদ্দিন বলেন, বিকেল ৪টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার বুকের ডান পাশে গুলি লেগেছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি।

ফেনীতে নিহত ৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচিতে সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আরও দেড় শতাধিক। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।

নিহতদের সবার পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-  ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সদর উপজেলার বারাহীপুর এলাকার ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সদর উপজেলার ফাজিলপুর কলাতলী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ছাইদুল ইসলাম (২০), পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন (২১), সোনাগাজীর চর মজলিশপুর মান্দারি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাকিব (২২), আরাফাত, দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর জয়লস্কর এলাকার মো. শাহজাহানে ছেলে ফার্ণিচার ব্যবসায়ী সরোয়ার জাহান মাসুদ (২১), লক্ষ্মীপুরের মালেকের ছেলে অটোরিকশা চালক সাইফুল।

রংপুরে কাউন্সিলরসহ নিহত চার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে রংপুরের রাজপথে মানুষের ঢল নামে। রোববার (৪ আগস্ট) সিটি বাজার এলাকার কাছাকাছি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধান হারা ও তার ভাগনেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্দার আব্দুল জলিল ও মিজানুর রহমান মিজান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, দুজনের মরদেহ হাতে পেয়েছেন। তবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

dhakapost

অন্যদিকে, কাউন্সিলর হারাধান হারা ও তার ভাগনেকে কুপিয়ে হত্যার তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৯ বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু।

নরসিংদীতে ছয়জন নিহত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুযায়ী নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে মাধবদী বাজার বড় মসজিদের অজুখানায় এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে বিকেলে মাধবদীর পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনা সত্য।

লক্ষ্মীপুরে চারজন নিহত

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তিনজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরএমও অরুপ পাল বলেন, অর্ধশতাধিক আহত রোগীকে হাসপাতাল আনা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে মৃত পেয়েছি। তারা গুলিবিদ্ধ। এ ছাড়া ঢাকা নেওয়ার পথে একজন মারা গেছেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পাবনায় তিন শিক্ষার্থী নিহত

পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীরা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের জেবি মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পেছন থেকে অতর্কিত গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (১৯), মাহবুুবুল হোসেন (১৬) ও ফাহিম (১৭) নিহত হন।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে অবস্থান করছেন।

মুন্সীগঞ্জে গুলিতে দুইজন নিহত 

মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. আবু হেনা জামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দু’জন মৃত ছিল। তাদের বয়স ২২-২৫ বছর। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গোলাপগঞ্জে নিহত দুই 

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইন শৃঙ্খলাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সময় গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন- ধারাবাহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)।

কুমিল্লায় পুলিশ ও বাসচালক নিহত

কুমিল্লায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।

অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে কুমিল্লার দেবিদ্বারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় দেবিদ্বার। সংঘর্ষে মো. রুবেল (৩৪) নামের এক বাসচালক নিহত হন।

দুপুর দেড়টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা চত্বরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রুবেল উপজেলার বারেক এলাকার বাসিন্দা ও প্রান্তি বাসের চালক ছিলেন। দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এহসান আলী ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, রোববার দুপুরে দাউদকান্দির গোমতা এলাকার ইলিয়টগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ থানা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। বিক্ষোভকারীরা এরশাদ মিয়া নামের হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবলকে পিটিয়ে আহত করে। পাশাপাশি হাইওয়ে থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আহত এরশাদ মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাগুরায় ছাত্রদলের নেতা নিহত

মাগুরায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। রোববার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শহরের ঢাকা রোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

dhakapost

জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করে। এ সময় নিহত হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম দাবি করেন বলেন, রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।

বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত

বরিশালে টুটুল চৌধুরী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এএসএম সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আর আঘাতগুলো এমনভাবে করা হয়েছে যে মাথার খুলির ভেতরে থাকা অনেককিছুই বাইরে বের হয়ে গেছে। এক কথায় রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত টুটুল চৌধুরী বরিশাল মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ দিপু।

জয়পুরহাটে যুবক নিহত 

জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জেলা শহর। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিশাল সরকার (২৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন শতাধিক।

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়া, কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকালে শাহবাগে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আন্দোলন চলাকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভেতরে থাকা অন্তত ৫০টি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। উত্তরা, প্রগতি সরণি, শাহবাগেও অন্দোলনকারীরা অবস্থান করেছেন।